বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাম নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত

  •    
  • ৬ জুন, ২০২২ ১৩:০২

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘যেহেতু আমাদের প্রচুর বেসরকারিভাবে গম আমদানি হতো সেটা খাদ্যে একটি সাপোর্ট দিতো। এটা না আসাতে মানুষ এখন চালের ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। আমাদের উৎপাদন ঠিক আছে, কিন্তু চালের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার ফলে মজুতদারদের পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীরাও একটু সুযোগ নিচ্ছে। সার্বিকভাবে নজরদারি ও অভিযান চলতে থাকুক, পাশাপাশি আমরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করে বাজারে প্রবাহ বৃদ্ধি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে।’

দাম নিয়ন্ত্রণে এবার বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সোমবার খাদ্যবিষয়ক সরকারের সর্বোচ্চ কমিটি খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমাদের আজকের মিটিংয়ের বলা হয়েছে, আমরা যে বাজার মনিটরিং করছি, তাতে মূল্য নিম্নমুখী।’

‘তারপরেও যেহেতু স্থিতিশীল বা পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে, ভোক্তাদের যাতে কষ্ট না হয় এবং কৃষকেরও যেন অস্বাভাবিকভাবে ধানের দাম কমে না যায় সেটাকে ব্যালান্স করতে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

সচিবালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: নিউজবাংলা

এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে বলে ধারণা দেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা সময় লাগতে পারে সপ্তাহখানেক বা যেভাবে ফাইল গড়াবে। আমরা তো আমাদের দিক থেকে তাড়াতাড়ি করার চেষ্টা করবো। তবে এটা হবে সীমিত সময়ের জন্য এবং সীমিত পরিমাণে যাতে আগামী মৌসুমে কৃষকের ক্ষতি না হয় সেটা বিবেচনা করে।’

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘যেহেতু আমাদের প্রচুর বেসরকারিভাবে গম আমদানি হতো সেটা খাদ্যে একটি সাপোর্ট দিতো। এটা না আসাতে মানুষ এখন চালের ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। আমাদের উৎপাদন ঠিক আছে, কিন্তু চালের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার ফলে মজুতদারদের পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীরাও একটু সুযোগ নিচ্ছে। সার্বিকভাবে নজরদারি ও অভিযান চলতে থাকুক, পাশাপাশি আমরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করে বাজারে প্রবাহ বৃদ্ধি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে।’

‘এটাই সবার অভিমত এবং সবাই এই সিদ্ধান্তে সর্বসম্মতি জানিয়েছে। আমরা শিগগিরই চাল আমদানি করার বিষয়টি এবং এই মিটিংয়ের রেজুলেশন নিয়ে এখনই সামারি রেডি করবো। এরপর এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবো, তিনি এনবিআরের কাছে পাঠাবেন। আমরা শুল্কমুক্ত করার প্রস্তাব দেব, তারপর ওনারা যেভাবে করেন। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হয়ে জিও জারি হবে।’

দেশের বাজারে কিছুদিন ধরেই চালের দাম চড়া। কেজিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। অভিযোগ আছে, মিলাররা ধান-চাল মজুত করে রাখছেন। একইভাবে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও মেমোরেন্ডাম অ্যাসোসিয়েশনের নীতি অনুমোদনের বাইরে গিয়ে ধান-চালের ব্যবসায় নেমেছে। তারা প্যাকেটজাত আকারে সেগুলো বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বাড়তি দামে বিক্রি করছে। এতে চালের ক্রয়ক্ষমতা ভোক্তার সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে চালের বাজারে অভিযান শুরু করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। রাজধানীসহ সারাদেশেই বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা মার্কেটে অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এসব অভিযানে চাল ব্যবসার লাইসেন্স আছে কি না এবং অনুমোদনের বেশি মজুত করা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফুড গ্রেইন লাইসেন্স যাচাইয়ের পাশাপাশি খাদ্যশস্যের ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদও যাচাই করে দেখছেন অভিযান পরিচালনাকারীরা। একই সঙ্গে মিলগেটে কী মূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে, তা দেখা হচ্ছে।

প্যাকেটজাত চালের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন

খোলা বাজার থেকে কিনে প্যাকেটজাত করে বেশি দামে চাল বিক্রি করা ছয় শিল্পগ্রুপের বিষয়ে নেয়া পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। গত ১ জুন সাংবাদিকদের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ‘খোলা বাজার থেকে চাল কিনে তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা যাবে না।

ওই সময় দেশের বাজারে চালের আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য ছয়টি শিল্পগ্রুপ স্কয়ার, প্রাণ, সিটি, আকিজ, বসুন্ধরা ও এসিআইকে দায়ী করেন মন্ত্রী।

এই ছয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সাধন চন্দ্র বলেন, ‘আমরা চিন্তা করছি যে এই সার্কুলার জারি করা যায় কি না, যারা প্যাকেট করে চাল বিক্রি করবেন তারা দেশের বাজার থেকে কিনতে পারবেন না। তারা ৬৭ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করে প্যাকেট করবেন। এটা আলোচনা চলছে।’

তবে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্যাকেটজাত চাল বিক্রিতে কোনো সমস্যা নেই।

বৈঠকের এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছয় প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ যারা প্যাকেটজাত করে চাল বিক্রি করছে তাদের বিষয়টিও মিটিংয়ে কথা হয়েছিলো। বাজারে যে চাল ৫০ টাকা ৬০ টাকা প্যাকেটে সেটা ৭০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। আমরা কিনছিও সেটা।

‘এ কারণে আমাদের একটি চিন্তা ছিল যে তাহলে এই প্যাকেটজাত চাল যদি কন্ট্রোল করতে পারি সাধারণ ভোক্তাদের কথা চিন্তা করে। কিন্তু আসলে আমাদের যেটা আলোচনা হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, অন্যান্যরাও বলেছেন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে নানান প্রকার জিনিস আছে যে বেশি দামে কিনতে পারে সে খাবে। কিন্তু সাধারণ ভোক্তাদের জন্য যাতে একটি নিম্নদর রাখতে পারি সেকারণে আমরা প্যাকেট বন্ধ করবো না কিন্তু যেটা করছি প্যাকেট করেন আর যাই করেন, আমাদের যে সার্কুলার আছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ রাখতে পারবেন না।

‘আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, ২০১১ সালের আমাদের আদেশ আছে যেটা ২০ সালে আমরা কারেকশন করে দিয়েছি যে মিলাররা কতটুকু চাল রাখতে পারবে বা ১১ সালের আদেশ আছে আড়ৎদার কতটুকু মজুদ রাখতে পারবে। ১ মেট্রিক টনের অতিরিক্ত যদি মজুত রেখে আপনি ব্যবসা করতে চান অবশ্যই আমাদের লাইসেন্স নিতে হবে। আমরা এখন আমাদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তাদের লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসছি। ব্যবসা করুক কিন্তু ১ মেট্রিক টনের অতিরিক্ত মজুদ করতে গেলেই লাইসেন্স নিতে হবে।’

খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম বলেন, ‘আড়ৎদার যতটুকু নির্ধারিত আছে ৩০ দিন পর্যন্ত আপনি একটুকু রাখতে পারবেন। এর বাহিরে হলেই তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের ওটা বাজেয়াপ্ত হবে। তার বিরুদ্ধে এ্যাকশন হবে। তারপর পাইকারি এবং আমদানির বিষয়েও সুস্পস্ট বলা আছে। ইচ্ছা মতো এনে কিন্তু রেখে দেয়া যাবে না।

‘প্যাকেটজাত চালে সমস্যা নেই, তবে সে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বেশি মজুদ রাখতে পারবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর