প্রচারণায় সরগম হয়ে উঠেছে কুমিল্লা। আলোচনার নতুন মাত্রা পেয়েছে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বক্তব্যে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত অভিযোগ করেছিলেন, সাক্কু মেয়র থাকাকালে দুর্নীতি করেছেন। তিনি মেয়র হতে পারলে তার বিচার করবেন।
শুক্রবার নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাজীপাড়া এলাকায় সাড়ে ১২ টায় গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে সাংবাদিকরা রিফাতের বক্তব্যের জবাব জানতে চান সাক্কুর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘উনি আমারে বিচার করার কে? হু আর ইউ। উনি কি বাংলাদেশের প্রাইম মিনিস্টার?’
‘আর যদি গায়ের জোর বেশি থাকে তাইলে কইয়েন স্টেডিয়ামে যাইত, আমিও যাব। আমি চোর হলে উনিও (আরফানুল হক রিফাত) চোর। গায়ের জোর থাকলে স্টেডিয়ামে আসুক।
‘যদি আজ রিফাত ভাই না দাঁড়াত, নৌকার মাঝি না হতো, সীমা যদি নৌকার মাঝি হইত, তাইলে রিফাত ভাই আমার আমার পিছে থাকত, বলত সীমারে ফেইল করাও।’
রিফাত এমনও বলেছেন, সাক্কুর দুর্নীতি প্রমাণ না করতে পারলে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাক্কু বলেন, ‘আল্লাহ তালা একটা চামড়ার মুখ দিছে, উনি বলতে পারে। প্রমাণ করুক না! উনি কি জজ, নাকি সরকার। উনি যেখানে দরকার অভিযোগ দেউক, আমি স্থানীয় সরকারের আন্ডারে মেয়রগিরি করছি। কোনো অভিযোগ থাকলে উনি স্থানীয় সরকারে জানাউক।
‘স্থানীয় সরকারের আইন আছে, কোনো অভিযোগ থাকলে স্থানীয় সরকারে জানাউক। আইনে আছে কোনো নাগরিক কিছু জানতে চাইলে চিঠি দেউক। আমরা তথ্য দিতে বাধ্য। এসব উদ্ভট কথা কেন বলে?’
শুক্রবার নৌকার প্রার্থী রিফাত প্রচারণা চালিয়েছেন নগরীর জাঙ্গালিয়া অঞ্চলে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হতে পারলে সাক্কুর দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করব। এক বছরের মধ্যে নগরীর যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসন করব।’
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার আজ নির্বাচনী প্রচারণা চালান নগরীর ১৩নং ওয়ার্ড থীরা পুকুরপাড় মসজিদ এলাকায়। তিনি বলেন, 'প্রচার-প্রচারণাকালে আমার লোকদের হুমকি দিচ্ছে নৌকার কর্মীরা। আমি এই বিষয়টিসহ সাতটি অভিযোগ দিয়েছি নির্বাচন কমিশনে। তার একটিরও প্রতিফলন দেখছি না।'
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে এবার ৫জন প্রার্থী মেয়র পদে লড়ছেন। এটি সিটির তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে ২০১২ ও ২০১৭ সালের দুই নির্বাচনে বিএনপির সমর্থনে জয় লাভ করেন সাক্কু। তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তিন জনকে দিয়েছে মার্কা।
প্রথম নির্বাচনে প্রবীণ নেতা আফজল খান সাক্কুর কাছে হারেন ৩৫ হাজার ভোটে। দ্বিতীয়বারের ভোটে আফজল কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমা সাক্কুর কাছে হারেন ১১ হাজার ভোটে।
আগামী ১৫জুনের ভোটে সাক্কুর বিপত্তির কারণ হয়েছেন নিজাম উদ্দিন কায়সার। এই প্রার্থীও বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। তিনি দলটির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা মহানগর কমিটির নেতা ছিলেন। তিনি ভোট কাটলে সাক্কুর পরাজয়ের কারণ হতে পারেন।
বিএনপি এবার এই ভোট বর্জন করলেও দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একটি অংশ সাক্কুর হয়ে একটি অংশ কায়সারের হয়ে ভোট করছেন।