বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইটভাটাগুলো ভাঙা হয়নি, দেয়া হয়েছে আঁচড়

  •    
  • ৩ জুন, ২০২২ ১১:৫০

জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মানিকগঞ্জে ১১টি লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা আছে। এর মধ্যে ১০টি ভেঙে দিয়েছি আর একটির হাইকোর্টে মামলা চলছে। এখন শুধু বৈধগুলোর কার্যক্রম চালু আছে। ভেঙে ফেলা ইটভাটা যদি কোনো কারণে চালু করা হয় তাহলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ভেঙে ফেলা হয়নি মানিকগঞ্জের বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা। এগুলোতে সমানে চলছে পোড়ানো ইট চুলা থেকে বের করার কাজ।

যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, জেলার ১১টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ১০টি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আরেকটি ভাটা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান।

ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

গত ১ মার্চ আশফাকুল ইসলাম ও ইকবাল কবিরের বেঞ্চ ১৬ মার্চের মধ্যে ভাটাগুলো ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার সাত উপজেলায় ১৪৭টি ইটভাটা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মানিকগঞ্জ সদরের এমিকা ব্রিকস, একতা ব্রিকস, সোবহান ব্রিকস, সিংগাইরের আলী আকবর ব্রিকস, সুমাইয়া ব্রিকস, মোহনা ব্রিকস, হরিরামপুরের সততা ব্রিকস, স্বাধীন ব্রিকস, আমিন ব্রিকস, সাটুরিয়ার খাঁন ব্রিকস ও ঘিওরের নূরুল ব্রিকসে কোনো বৈধতা নেই।

প্রশাসনের দাবি, ঘিওরের নূরুল ব্রিকস ছাড়া বাকি ১০ ভাটাই ভেঙে ফেলা হয়েছে। নূরুল ব্রিকসের হাইকোর্টে একটি মামলা চলায় এটি এখনও ভাঙা হয়নি।

এই ১০ ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ভাটার কোনো একটি ছোট অংশ ভাঙা হয়েছে। বাকি প্রায় পুরো ভাটাই অক্ষত। সবগুলোতেই চলছে কাজ।

প্রতিটি ভাটায় সাধারণত শীত থেকে বর্ষার আগ পর্যন্ত ইট তৈরির কাজ চলে। এখন ইট পোড়ানোর সময় শেষ। পোড়া ইট চুলা থেকে বের করার কাজ চলছে।

ইট চুলা থেকে বের করার কাজ চললেও মালিকরা দাবি করছেন তারা ভাটা বন্ধ রেখেছেন।

হরিরামপুরের সততা ব্রিকসের মালিক ও বলড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীন খাঁন কুন্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কীভাবে ভাটা চালাই এবং কী অবস্থা আপনারা সব জানেন। আমার ভাটা ভাঙার নির্দেশ দেয়নি, বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ জন্য শুধু ইট বের করার কাজ করা হচ্ছে। নতুন ইট তৈরি হচ্ছে না।’

স্বাধীন বিকসের ম্যানেজার স্বপন কুমার বলেন, ‘আমাদের ভাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। ভাটার এক কোনায় ভেকু মেশিন দিয়ে আঁচড় দিয়েছিল কিন্তু ভাঙেনি। আমাদের ইট পোড়ানো শেষ। এখন ইট বের করছি চুল্লি থেকে।’

হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ইটভাটা না ভাঙাকে আদালত অবমাননা হিসেবে দেখছেন মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী দীপক কুমার ঘোষ।

তিনি বলেন, ‘যদি উচ্চ আদালত কোনো আদেশ দেয়, তাহলে তা সবার মানতে হবে। আদেশ যদি মানা না হয়, তাহলে আদালত অবমাননা করা হয়। আদালতের আদেশ বা নির্দেশ অবমাননা করলে, তাকে জেল-জরিমানা এবং শাস্তি পেতে হতে হয়। অর্থাৎ আদালতের কোনো নিদের্শ বা আদেশ অমান্য করার অধিকার কারো নাই।’

এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলার তিনটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভেঙে ফেলার জিনিসপত্র না থাকায় সম্পূর্ণ ভাটা ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি।

সিংগাইরের ইউএনও বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় যে তিনটি অবৈধ ইটভাটা ছিল সেগুলো ভেঙে অচল করে দেয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মানিকগঞ্জে ১১টি লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা আছে। এর মধ্যে ১০টি ভেঙে দিয়েছি আর একটির হাইকোর্টে মামলা চলছে। এখন শুধু বৈধগুলোর কার্যক্রম চালু আছে। ভেঙে ফেলা ইটভাটা যদি কোনো কারণে চালু করা হয় তাহলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর