রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন-কর্মসূচির অন্যথা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। আন্দোলন ও নির্বাচন প্রশ্নে ঐক্য করতে চাইছে। সেটা ভালো কথা। তারা যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করে, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে তাহলে স্বাগত জানাই। কিন্তু এর অন্যথা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের ১৭ জন সদস্য বক্তব্য দেন। আলোচনার বড় অংশ জুড়েই ছিল পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, খাদ্যপণ্যের মূল্য, দলের আগামী জাতীয় সম্মেলন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
বৈঠকে অংশ নেয়া উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরমের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কর্মকাণ্ড চালালে সেটা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে।’
একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে বলেন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করলে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বৈঠকে বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হবে। অনেকেই রাজনীতির মাঠে এখন লাশ চায়। তাই সতর্ক হয়ে পা ফেলতে হবে।
অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, যথেষ্ট খাদ্য মজুদ আছে। তাছাড়া খাদ্যশস্যের ফলনও ভালো হচ্ছে। চিন্তার তেমন কিছু নেই। তবে বিশ্বব্যাপী পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবে যেসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলোর বিষয়ে সরকার সতর্ক অবস্থানে আছে।
সূত্র জানায়, সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মওলা নকশবন্দী মাধ্যমিক পর্যায়ে ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবার উদ্দেশে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে হবে। মারামারি, পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচির দরকার নেই। তবে কেউ আন্দোলনের নামে সহিংসতার উপাদান যুক্ত করলে সে অবস্থায় প্রতিরোধ করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে তারা এলে আমরা রাজনৈতিকভাবে সেটা মোকাবিলা করব। আর তারা যদি সহিংসতা করে তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যা করণীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেই ব্যবস্থা নেবে।’