সাধারণ সভা ডেকেছেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এ কারণে ঘুরছে না কোনো বাসের চাকা। বাস চলাচল বন্ধ রাখায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গন্তব্যমুখী মানুষ। তারা বলছেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য শ্রমিক নেতাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
তবে এ বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের কোনো নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সভায় উপস্থিত নেতাদের একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও কেউ রিসিভ করেননি।
ঘটনাটি হবিগঞ্জের। মঙ্গলবার সকাল থেকে এ জেলায় বাস চলছে না বলে জানিয়েছেন জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শুভ্র শঙ্ক রায়।তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে হবিগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সভা চলছে। সভায় শ্রমিক নেতারা ছাড়াও সাধারণ শ্রমিকরা অংশ নেয়ায় সব ধরনের বাস বন্ধ রয়েছে। তবে সন্ধ্যার পর বাস চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় জরুরি কাজে বিকল্প পরিবহন হিসেবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা অন্য কোন মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। নবীগঞ্জের ইমামবাড়ি এলাকার রিপন মিয়া বলেন, ‘আমি জরুরি কাজে শ্রীমঙ্গল যাব। বাস টার্মিনালে এসে দেখি কোনো গাড়ি চলছে না। এখন কীভাবে যাব সেটা বুঝতে পারছি না। কোনো ঘোষণা ছাড়া যারা বাস বন্ধ রেখেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ঢাকার একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে পড়েন আরিফুল চৌধুরী। তিনি তার বাবাকে নিয়ে ঢাকা যেতে হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনালে এসছেন। তিনি বলেন, ‘কাল সকাল থেকে আমার এক্সাম। আজ যেতে না পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কিন্তু কোনো পরিবহণ না চলার কারণে কীভাবে যাব বুঝতে পারছি না। অন্য কোন গাড়িও পাচ্ছি না।’আব্দুল মোতালিব বলেন, ‘আমি মাধবপুর একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। রাতে নাইট ডিউটি আছে। কিন্তু গাড়ি না চলায় যেতে পারছি না। দুই ঘণ্টা ধরে গাড়ির জন্য বসে আছি। ঠিক সময় অফিসে যেতে না পারলে চাকরিটাও থাকবে না।’
জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব শাহ জালাল উদ্দিন জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এভাবে হুট করে বাস বন্ধ রাখার কারণে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। মালিক-শ্রমিক নেতারা দাবি করছেন, তারা নাকি গতকাল একটি পত্রিকায় বা ফেসবুকে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এভাবে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বা ফেসবুকে স্ট্যাটাসেরর মাধ্যমে অবগত করলে হবে না। কারণ একটিমাত্র পত্রিকার মাধ্যমে সবাই বিষয়টি জানতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘সভা বা অনুষ্ঠান হতেই পারে। তাই বলে এভাবে গণহারে বাস বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি। কিছু গাড়ি অন্তত চলাচল করা উচিৎ ছিল। তাহলে মানুষকে এত দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।’