দেশের বিভিন্ন খাত ডিজিটাল রূপান্তরে বেশ এগোলেও স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত এখনও বেশ পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান (বিটিআরসি) শ্যামসুন্দর সিকদার।
বক্তব্যে মন্ত্রী জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে আমরা অনেকখানি এগিয়ে গেছি। স্বাস্থ্য খাতে এখন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, অবশ্য এটা একেবারেই কম। সমাজসেবাও ডিজিটালাইজেশনে পিছিয়ে রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে শিক্ষা খাত। এই খাতগুলোকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আরও বেশি ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, স্বাস্থ্যসেবার যে প্রযুক্তিগুলো রয়েছে, সেখানে ফোরজি-ফাইভজি সেবা খুবই কার্যকরী। আমাদের মতো দেশে যেখানে এখনো তৃণমূল পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে পারিনি, সে জায়গায় এ প্রযুক্তি দিয়ে মানুষকে সে সেবা দিতে পারি।’
দেশে ফাইভজি চালু হলেও এখন পর্যন্ত ফোরজি সেবাই মানুষ ঠিকমতো পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন জব্বার। তিনি বলেন, ‘আমরা ফাইভজি পর্যন্ত গিয়েছি। এটা পলিসিগত দিক থেকে আমরা হয়তো করেছি, কিন্তু এখনো ফোরজি ঠিকমতো হয়নি। আমাদেরকে ফোরজি কার্যকর করতে হবে। আমাদের জন্য সুখবর, পৃথিবীতে এখন এ প্রযুক্তি আছে। ফোরজি অবকাঠামোতে কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি যোগ করলেও তাতে ফাইভজি সুবিধা পাওয়া যাবে। অপারেটরদের বলব আপনারা ফোরজি অবকাঠামো বিস্তার করেন। পরে প্রয়োজন বুঝে সেখানে যন্ত্রপাতি সংযোজন করে ফাইভজি সেবা দিতে পারবেন।’
তবে থ্রিজি থেকে ফোরজি সেবার রূপান্তরে প্রধান সমস্যা পুরো ডিভাইস আপডেট করতে হয়। ফাইভজির ক্ষেত্রে সেটা হয় না বলেও জানান তিনি।
তাই ফোরজি ও ফাইভজির চাহিদা নিরূপণ করে যেখানে যে সেবা দরকার, সেখানে সেই ধরনের সেবা দিতে হবে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, ‘বয়োবৃদ্ধদের সেবায়ও এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার হচ্ছে। এটি আরও বিস্তৃতি করতে হবে। এখন দেখা যায়, ছেলে-মেয়ে বিদেশে থাকেন, বাবা-মা দেশে। তারা বাসায় আইপিও ক্যামেরা বসিয়ে দিয়েছেন। তা দিয়ে দেশে বাবা-মার খেয়াল রাখতে পারছেন। কখন কী প্রয়োজন সে সেবা দিতে পারছেন।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘একসময় বিনা মূল্যে সাবমেরিন কেব্লের অফার পেলেও বিএনপি তা নেয়নি, পরে যখন অনেক টাকা খরচ করে নিল, তখনও গতি ছিল মাত্র ৭০০ জিবিপিএস। আমরা দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে তা ৬ হাজার জিবিপিএসে উন্নীত করেছি। আমাদের ভয় দেখা দিয়েছে, যে হারে মানুষ ডেটা খাচ্ছে, তাতে দেখা যাবে আমরা ডেটা দিতে পারছি না। তাই আমরা তৃতীয় সাবমেরিন কেব্লের সংযোগ নিচ্ছি, তাতে ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস গতি পাব।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ১৭ মে পালন করার কথা থাকলেও তা রোববার পালন করা হয়। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি এবং স্বাস্থ্যসম্মত বার্ধক্যের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি’।
এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় ঢাকায় মন্ত্রীর নেতৃত্বে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।