পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামে আগুনে পুড়ে ইতি বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্বামী মো. জলিল ঘুমন্ত ইতির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ইতির মৃত্যু হয়।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
ইতির বড় ভাই ফারুক খান বলেন, ‘আমার বোন ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। প্রায় সাত বছর আগে কুষ্টিয়ার মো. জলিলের সঙ্গে ইতির বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে আমাদের বাড়ি পাঙ্গাশিয়ায় আসে।
‘প্রথমে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এর মধ্যে তাদের সংসারে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। বছর দুয়েক আগে থেকে জলিল যৌতুকের দাবিতে ইতিকে মারধর করত। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ইতি এক সপ্তাহ আগে তার স্বামীর কাছে বিচ্ছেদের কাগজ পাঠায়।
‘সেই কাগজ পেয়ে তিন দিন আগে আমার বোনকে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয় মোবাইল ফোনে। ঠিক তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার রাতে জলিল ঢাকা থেকে দুমকীতে আসে।’
ফারুক বলেন, ‘ঘটনার দিন আমাদের ঘরের বারান্দার একটি রুমে ঘুমিয়েছিল ইতি। অন্য রুমে আমার বাবা-মা ও তার ছেলে ঘুমিয়েছিল। রাত পৌনে ১২টার দিকে ইতির রুমে দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় জলিল। মুহূর্তের মধ্যে পুরো রুমসহ ইতি অগ্নিদগ্ধ হয়।
‘ধোঁয়ার গন্ধ পেয়ে বাবা-মা ঘুম থেকে উঠে ইতির রুমের দিকে যাওয়ার সময় জলিলকে পালিয়ে যেতে দেখেন। পরে ইতিকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে রাত ৩টার দিকে বরিশাল মেডিক্যালে রেফার করা হয়। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে সকাল ৭টার দিকে ইতি মারা যায়।’
কী বলছে পুলিশ
দুমকী থানার ওসি আবদুস সালাম বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে।
‘এর পরও পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
ঘটনার পর থেকে জলিলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।