কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে শুক্রবার দুপুর থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন। নগরীর অলিগলিতে গান ও কথার সুরে সুরে ভোট চাইতে দেখা যায় প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের।
বেলা ২টা থেকে শুরু হয় প্রচারকাজ। চলবে ১৩ জুন রাত পর্যন্ত।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক পেয়ে দুপুর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করেন প্রার্থীরা।
অনেক প্রার্থী প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শনিবার থেকে তারা শুরু করবেন।
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে প্রচার শুরু করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তবে দলীয় প্রার্থীকে প্রথম দিন মাঠে দেখা যায়নি।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ‘শনিবার সকালে আমরা রানীর দীঘিরপাড় আমাদের নির্বাচনি অফিস উদ্বোধন করব। রিফাত ভাই তার ইশতেহার ঘোষণা করবেন।
‘তারপর সিদ্ধান্ত নেব রিফাত ভাইকে নিয়ে আমরা কীভাবে প্রচার করব। তবে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমাদের নেতাকর্মীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। মাইকে প্রচার হচ্ছে।’
নগরীর নোয়াগাঁও চৌমুহনী এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। প্রচারে তার অনুসারীরা অংশ নেন।
কায়সারের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘প্রচারের প্রথম দিন আমরা সিটি করপোরেশনের দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেছি। আমাদের গণসংযোগটি বড় মিছিলে পরিণত হয়। মানুষ আমাদের জনসংযোগকে স্বাগত জানায়।’
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু প্রথম দিনে তার নিজের কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রচারের বিষয়ে কথা বলেন।
সাক্কুর অনুসারী কবির হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমরা শুক্রবার ২৭ ওয়ার্ডের সব নেতাকর্মীর ডেকেছি। তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছি, কর্মপরিকল্পনা করছি। শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করব।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রতীক পেয়েছি। আজ দলীয় কাজে চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে বিভাগীয় সমাবেশে রয়েছি। শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার করব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল পেয়েছেন হরিণ প্রতীক। শুক্রবার বিকেলে মেয়র প্রার্থী কামরুল বলেন, ‘আমি প্রচারের জন্য অনুমতি চেয়েছি। শনিবার নির্ধারিত সময়ে প্রচার শুরু করব।
শনিবার প্রতীক বরাদ্দের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ রায়হান আহমেদ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মঞ্জুর কাদের মনিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এই দুই প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় এখন ২৫টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হবে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নাবী চৌধুরী বলেন, ‘শুক্রবার আমরা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছি। সুষ্ঠুভাবে প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে। পাশাপাশি আমরা প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছি, কেউ যেন নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ না করেন। যদি কেউ নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেন, তাহলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।’
আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল লক্ষ করা গেছে। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম কাজ করছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামলাতে জেলা পুলিশ প্রস্তুত।