সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে দ্রুত সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ আশার কথা তুলে ধরেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা।
বিকেল সোয়া ৫টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে যান।
প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের আজকে আমি দুপুরের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছি যে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য, দেশের মানুষের যে অধিকারগুলো হারিয়ে গেছে তাদের ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, কাজের বিচার পাওয়ার অধিকার, ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার, তাদের কল্যাণের অধিকার আজকের এই ফ্যাসিস্ট সরকার অধিকারগুলোহরণ করেছে এই বিষয়গুলোকে ফিরে পাওয়ার জন্য তাদের সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের একটি সরকার গঠনের জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভেবে ইতিপূর্বে অনানুষ্ঠানিকভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি যুক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছি।
‘আজকে দেশের মানুষ আশা করে আছে যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তারা একটা ঐক্যের মধ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে একটা সফল কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে এবং সেই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পরিবর্তন হবে। সেই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার এবং পার্লামেন্ট গঠন হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কথা বলেছি।’
গণতন্ত্র উদ্ধার ইস্যু আজকের আলোচনার মূল বিষয় ছিল বলে জানিয়েছেন ফখরুল। বলেন, ‘প্রধান বিষয় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হবে। আলোচনা করেছি, তারপরের নির্বাচন কমিশন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলগুলোকে নিয়ে একটি মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন করা।
‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে বলেছেন যে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আরেকটি প্রধান বিষয় পক্ষথেকে যা আছে তাতে উনিও (মান্না) একমত হয়েছেন, তিনি বলেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে, তার মুক্তি। শুধু আমরা নই দেশের বেশিরভাগ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর যে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা এবং আটক করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি মামলাগুলো প্রত্যাহার এই যে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে এগুলোকে বন্ধ করা।’
ওই সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘জনগণের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে একটা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, তা নিয়ে বিস্তারিত না হলেও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। একটি বিষয়ে আমরা একমত যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা লড়াই করব। বৈঠকের শুরুতেই আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। এটাই ছিল আলোচনার ভিত্তি।’
বৈঠকে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, নির্বাহী সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন অংশ নেন। অন্যদিকে মান্নার সঙ্গে নাগরিক ঐক্যর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এম আকরাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখরুল ইসলাম নবাব, জিল্লুর চৌধুরী দীপু, যুগ্ম সম্পাদক ডা. জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবু জাহেদ মোহাম্মদ সারওয়ার অংশ নেন।