বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খালেদাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিএনপির বিক্ষোভের ডাক

  •    
  • ২৪ মে, ২০২২ ১৬:৩৪

গত ১৮ মে প্রধানমন্ত্রী এক আলোচনায় বলেন, ‘বলেছে, স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে, সেটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেয়া। পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, তাতে চড়া যাবে না, চড়লে সেটা ভেঙে যাবে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসররা। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’

পদ্মা সেতু বিষয়ে বলতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহম্মদ ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিএনপি।

ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৬ মে ঢাকা ছাড়া সকল মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো যৌথভাবে সমাবেশ করবে।

মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি জানান, সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে তার ভাষায় দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সব দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে বিএনপি। গত নির্বাচনে বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক নাগরিক ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার কার্যালয়ে গিয়ে এই আলোচনা শুরু করবেন মির্জা ফখরুল।

সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসসহ দেশে সিনিয়র সিটিজেনদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অসম্মানজনক বক্তব্যের প্রতিবাদে’ এই বিক্ষোভ হবে।

কী বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী

গত ১৮ মে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের দলীয় এক আলোচনায় শেখ হাসিনা জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক যেন সরে যায়, সে জন্য ড. ইউনূস, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক নানা সক্রিয় চেষ্টা চালিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, এই সেতু ভেঙে পড়ে যাবে- এই ধরনের বক্তব্য রাখায় খালেদা জিয়ার প্রতিও ক্ষোভ জানান শেখ হাসিনা।

নানা বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি পদ্মা সেতুবিরোধীদের সেতুতে নিয়ে চোবানোর কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার উক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বলেছে, স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে, সেটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেয়া। পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, তাতে চড়া যাবে না, চড়লে সেটা ভেঙে যাবে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসররা। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’

ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যিনি (ড. ইউনূস) এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দুটি চুবনি দিয়ে উঠিয়ে নেয়া উচিত, মরে যাতে না যায়। পদ্মা নদীতে দুটি চুবনি দিয়ে সেতুতে উঠিয়া নেয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।’

পরদিন মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করেন সরকারপ্রধানের এই বক্তব্য প্রচ্ছন্নভাবে খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে হত্যার হুমকি।

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে তিনি রয়েছেন, যেভাবেই আসুন না কেন। তিনি এই ধরনের উক্তি করতে পারেন না।

‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, তাকে সরাসরি হত্যার হুমকির শামিল। সেতু থেকে ফেলে দেয়া- এটা কখনই স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না। আমরা বিস্মিত হয়েছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি এবং প্রচণ্ডভাবে নিন্দা জানাই তার এই উক্তিকে।’

সংলাপের ঘোষণা

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার কথা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চূড়ান্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে রূপরেখা, সেই রূপরেখা তৈরি করা হবে।’

বিকেল ৫টায় নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে যাবেন বলেও জানান ফখরুল।

আলোচনা কি ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে হবে, নাকি অন্য দলের সঙ্গেও হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকলের সঙ্গেই হবে, অল দ্যা পলিটিক্যাল পার্টিসের সঙ্গে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে হবে কি না- এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘কথা তো বলতে হবে। অবশ্যই। তাদের সঙ্গে কথা না বললে কেমন করে হবে। সকলের সঙ্গেই তো কথা বলতে হবে।’

অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘২০ দলীয় জোট তো আমরা এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করি নাই। এই জোটের কী হবে সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজড করব।’

সংলাপের উদ্দেশ্য নিয়ে এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘আলোচনার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং এই ফ্যাসিবাদী সরকার যারা মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং আজকে অর্থনীতি, দেশের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, যেগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা-এটাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য।’

বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সংসদ বাতিল করে পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের পুরোনো দাবিগুলো আবার তুলে ধরেন বিএনপি নেতা।

বলেন, ‘এই আলোচনার মধ্য দিয়ে তাদের অন্যান্য দাবি নিয়ে একক দাবিনামা তৈরি করা হবে। একক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করব।’

এই একক ঐক্যের জোটের নাম কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা একে জোট বলছি না, অন্য কোনো কিছু বলছি না। আলোচনা করার মধ্য দিয়ে ফরমেট, ফর্ম নির্ধারিত হবে।'

সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।

এ বিভাগের আরো খবর