পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চাঁদাবাজির মামলায় জড়ালেন সময় টিভি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যুরো প্রধান উজ্জল চক্রবর্তীসহ ছয়জন।
রোববার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (আশুগঞ্জ) আদালতে ওই মামলাটি করেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আনার কলি। পরে বিচারক আছমা আক্তার নিপা এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে আনার কলির বিরুদ্ধেও হুমকি ও অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আশুগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারও (ভূমি)। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিক উজ্জল চক্রবর্তীও আনার কলির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন।
আনার কলির করা মামলায় উজ্জল ছাড়া অন্য পাঁচ আসামি হলেন আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু, চর চারতলা গ্রামের নুরুল্লাহ, মাহবুব, সালমান ও হাছান জাবেদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আনার কলি রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ থেকে এক হাজার ১৮৮ বর্গফুট ভূমি ইজারা নেন। গত ১৪ মে ওই ভূমিতে অস্থায়ীভাবে দোকানঘর নির্মাণ শুরু করলে আসামিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তার কাছে চাঁদা চান। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা কাজ বন্ধ করার উদ্দেশে আশুগঞ্জের এসি ল্যান্ডকে মিথ্যা তথ্য দেন।
এতে আরও বলা হয়, এসি ল্যান্ড মো. আশরাফুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদানুবাদের একপর্যায়ে আনার কলিকে চড়-থাপ্পড় মারার হুমকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আনার কলি কাগজপত্র নিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেখিয়ে আবার কাজ শুরু করেন।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা আনার কলিকে শারীরিকভাবে নির্যাতনসহ পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে কাজ বন্ধের হুমকি দেন।
মামলায় সময় টিভির ব্যুরোপ্রধান উজ্জলকে কথিত সাংবাদিক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সময় টিভির ব্যুরোপ্রধান উজ্জল চক্রবর্তী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশুগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে ভরাটের তথ্য পেয়ে ১৮ মে দুপুরে তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আমাকে হুমকি দেন। তিনি ভুয়া সাংবাদিক বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এ ঘটনায় আমি ওই দিনই আনার কলির বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় জিডি করি।’
এসি ল্যান্ড আশরাফুল হক বলেন, ‘রেলের জায়গার পাশে খাসজমিও ভরাট করছেন দেখে তাকে বাধা দিলে তিনি আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম বলে হুমকি দেন। এ ঘটনার পর আমার পক্ষে আমার অফিসের নাজির মনিরুজ্জামান খন্দকার আশুগঞ্জ থানায় জিডি করেন।’
এ বিষয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আনার কলি বলেন, ‘সময় টিভির ব্যুরোপ্রধান উজ্জল চক্রবর্তী তার কাছে কোনো চাঁদা চাননি। গত ১৯ মে সময় টিভিতে তাকে নিয়ে সম্প্রচারিত সংবাদে তার মানহানি হয়েছে।’
মানহানির মামলা না দিয়ে কেন চাঁদাবাজির মামলা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।