মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খুলনার বটিয়াঘাটার ছয়জনের বিরুদ্ধে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রোববার রায়ের জন্য মামলাটি সিএভি (অপেক্ষমাণ) রাখেন।
মামলার ছয় আসামি হলেন আমজাদ হোসেন হাওলাদার, সহর আলী সরদার, আতিয়ার রহমান শেখ, মোতাসিন বিল্লাহ ও কামাল উদ্দিন গোলদার। পলাতক রয়েছেন নজরুল ইসলাম।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অন্যদিকে আসামিপক্ষের (ডিফেন্স) আইনজীবী ছিলেন আবদুস সাত্তার পালোয়ান। আর পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় আইনজীবী ছিলেন গাজী এইচএম তামিম।
আসামিদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
চার অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ১০ আগস্ট আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ চার থেকে পাঁচজন রাজাকার বটিয়াঘাটার মাছালিয়া গ্রামের শান্তি লতা মণ্ডলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিনোদ মণ্ডলকে আটক-নির্যাতন, অপহরণ ও গুলি করে হত্যা করেন।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর বটিয়াঘাটার পূর্বহালিয়া গ্রামের চাপরাশী বাড়িতে হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র হরিদাস মজুমদারকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করেন আসামিরা।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২১ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করতে বটিয়াঘাটার সুখদাড়া গ্রামে হামলা চালিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের চারজনকে হত্যা, চার-ছয়টি বাড়ির মালামাল লুট এবং অগ্নিসংযোগ করে।
আর চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর এই আসামিরা বটিয়াঘাটার বারোআড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জ্যোতিষ মণ্ডল এবং আব্দুল আজিজকে গুলি করে হত্যা করে।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার তদন্ত শুরু করে ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে সাত ভলিউমের এক হাজার ২৭ পাতার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে।