টানা দুই দিন কমার পর ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে রোববার আবার বাড়ছে সিলেটের সুরমা নদীর পানি। এতে দুর্ভোগ আরও দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন বানভাসিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে সিলেট পয়েন্টে পানি অপরিবর্তিত আছে। অন্যদিকে ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও কুশিয়ারার পানি বাড়ায় বাঁধ ভেঙে ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে পাউবো সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, ‘সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে বেশির ভাগ এলাকা থেকেই পানি নেমে যাবে।’
এদিকে দীর্ঘদিনের বন্যায় বানভাসিদের সংকট আরও বেড়েছে। ত্রাণ নিয়ে হাহাকার দেখা দিয়েছে অনেক জায়গায়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে। শনিবার কোম্পানীগঞ্জে ত্রাণ নিয়ে দুর্গতদের মধ্যে কাড়াকাড়ি ও হট্টগোলের ঘটনাও ঘটে।
জকিগঞ্জ উপজেলার দিনমজুর লিমন আহমদ বলেন, ‘৭ থেকে ৮ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। কাজও নেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ ত্রাণ দেয়নি। এভাবে আর কয়েক দিন চললে না খেয়ে মরতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষক ও মৎস্যজীবীরা। বোরোর পর তলিয়ে গেছে আউশ ধানের বীজতলা। ভেসে গেছে হাজার খামারের মাছ।
এ দুর্যোগের মধ্যেই সিলেটে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এতে বাড়তি ঝুঁকিতে পড়েছেন বানভাসিরা। সিলেটের সিভিল সার্জন এস এম শাহারিয়ার বলেন, ‘এরই মধ্যে শতাধিক লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছি। বাড়ছে চর্মরোগও।’
পানি কমলে রোগবালাই আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে এ জন্য আমরা এরই মধ্যে ১৪০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছি। তারা বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার্তদের সেবায় কাজ করছে।’
ত্রাণের কোনো সংকট নেই জানিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ‘শনিবার পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে ৩২৫ টন চাল, নগদ ১৫ লাখ টাকা ও সাড়ে ৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
‘এখনও আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেয়া হবে।’