বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২৫ বছর পর সম্মেলন, তাতেও ‘নানা অনিয়ম’

  •    
  • ২০ মে, ২০২২ ১৮:৪৪

‘সম্মেলন ঘিরে বর্ধিত সভার মাধ্যমে কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেটি না করে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ইচ্ছামতো কাউন্সিলর বানিয়েছেন। সবার নাম আবার প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে ইউনিয়নভিক্তিক কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেখানেও সেই নেতার পছন্দসই লোকদের করা হয়েছে কাউন্সিলর। জানেন না বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।’

তিন বছর পর হওয়ার কথা ছিল যে সম্মেলন, সেটি হতে যাচ্ছে ২৫ বছর পর। তাও যে প্রক্রিয়া মেনে এগোনোর কথা, তার কিছুই হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি পক্ষ গঠনতন্ত্র না মেনে নিজেদের মতো করে কাউন্সিলর বানিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নেতৃত্বে আসতে চাইছে।

কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ ভীষণ ক্ষুব্ধ।

শুক্রবার উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আড়াই দশক পর সম্মেলন ঘিরে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কথা, সেটির বদলে বিরাজ করছে হতাশা।

অভিযোগ করা হয়, সম্মেলন ঘিরে বর্ধিত সভার মাধ্যমে কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেটি না করে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ইচ্ছামতো কাউন্সিলর বানিয়েছেন। সবার নাম আবার প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে ইউনিয়নভিক্তিক কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেখানে সেই নেতার পছন্দসই লোকদের করা হয়েছে কাউন্সিলর। জানেন না বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আগামী ২৫ মে সম্মেলন সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিদ্দিক হোসাইন এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জোবায়ের।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলার সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। সে সময় কেবল সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নিতে যাওয়া হয়নি।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শরীফ আহমেদ সাদী নেতৃত্ব করে গেছেন।

এই কমিটি প্রথমত ২০০৩ সালে এবং পরে ২০১৪ সালে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সম্মেলন ও কাউন্সিল করেছিল। এসব সম্মেলনে ১১টি ইউনিয়নে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং কোনো কোনো ইউনিয়নে সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।

১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সনের করা ইউনিয়ন কমিটিগুলোকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটিগুলো যে কাউন্সিলর তালিকা করছে সেই তালিকা বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ মে হয়তো সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন হতে পারে, কিন্তু কাউন্সিল অধিবেশন করা গঠনতান্ত্রিক বিধানে সম্ভব নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর এক বছর আগে থেকে তার আত্মীয় এক নেতা এই অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিত্ত-বৈভব ও সম্পদ অর্জনের রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সদরের গোছানো এই মাঠ তিনি তছনছ করে দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খানকেও কাউন্সিলার রাখা হয়নি। ইউনিয়নে বসবাসকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, সহযোগী সংগঠনগুলোর জেলা-উপজেলা নেতাদেরও নাম নেই। ইউনিয়নের সাবেক গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতারও নাম রাখা হয়নি। ওয়ার্ড কমিটিসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অধিকাংশের নাম নেই।

অন্যদিকে ইউনিয়ন কমিটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির এবং কমিটির পদবিধারী নেতাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এমনকি কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানেন না তাদের ইউনিয়নের কী তালিকা করা হয়েছে এবং তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

এসব ঘটনায় সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুকে দায়ী করছেন সংবাদ সম্মেলনে আসা নেতারা। বলা হয়, ‘বস্তুপেঁচা, গণবিচ্ছিন্ন, কর্মী ও সমর্থক বিচ্ছিন্ন সর্বোপরী সাধারণ জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য জরাজীর্ণ নেতৃত্বই প্রতিষ্ঠিত হবে। যদি তা-ই হয় তাহলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐ বিশেষ নেতার পকেটবন্দি নেতৃত্ব পাবে। ফলশ্রুতিতে দার্শনিক রাজনীতিবিদ, আমাদের বিপুল শ্রদ্ধার আসনে থাকা বিউটি অব পলিটিক্সখ্যাত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি অবমাননা হবে।’

এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো করা সম্ভব হয়নি।’ কী ধরনের প্রতিকূলতা ছিল? জানতে চাইলে সুদত্তর দেননি।

তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলার কমিটি করা হবে। এ মাসেই চারটি উপজেলায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৫ মে সদর উপজেলা, ২৬ তারিখে হোসেনপুর উপজেলা, ৩০ তারিখে ইটনা এবং ৩১ তারিখে অষ্টগ্রাম উপজেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল, দানাপাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিবাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম, মারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাল মিয়া, মহিনন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক তৌহিদ, কর্শা কড়িয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাকুল, মাইজকাপন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর