বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবি ছাত্রের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত-যৌন হয়রানির অভিযোগ

  •    
  • ১৯ মে, ২০২২ ১১:৪৮

দুই ছাত্রীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একজনকে উত্ত্যক্ত করেন রাকিব। পরের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন চত্বরে অন্যজনকে যৌন হয়রানি করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন দুই ছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেছেন তারা।

অভিযুক্ত ছাত্রের নাম রাকিবুল হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। থাকেন বিজয় একাত্তর হলে।

দুই ছাত্রীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একজনকে উত্ত্যক্ত করেন রাকিব। পরের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন চত্বরে অন্যজনকে যৌন হয়রানি করেন তিনি।

টিএসসির ঘটনায় ভুক্তভোগী দাবি করা ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে।

শিখা চিরন্তন চত্বরের ঘটনায় ভুক্তভোগী দাবি করা ছাত্র্রী কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি থাকেন মিরপুরে।

টিএসসির ঘটনায় রাকিবই একমাত্র অভিযুক্ত। দ্বিতীয় ঘটনায় ইবির ছাত্রী রাকিবের সঙ্গে আরও দুই ছাত্রের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন।

ইবি ছাত্রী রাকিবসহ আরও এক ছাত্রের শুধু নাম জানাতে পেরেছেন। অন্যজনের কোনো পরিচয় জানাতে পারেননি।

ইবির ছাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিখা চিরন্তনের ঘটনায় রাকিব ছাড়া অভিযুক্ত অন্য শিক্ষার্থীর নাম রাফাত, তবে তার বিভাগ-সেশন আমি শনাক্ত করতে পারিনি।’

কীভাবে অভিযুক্তদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেদিনের পর থেকে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বন্ধুদের ঘটনাটা জানাই। অভিযুক্তদের চেহারার ধরন এবং দেখতে কী রকম ছিল, সেটা জানাই। পরে তারা বেশ কয়েকজনের ছবি দেখালে সেখান থেকে আমি রাকিবুল ইসলামকে শনাক্ত করেছি।

‘আর সেদিনের ঘটনায় সেই তিনজনের কথাবার্তা থেকে রাফাত নামের একজনের নাম শুনতে পাই, তবে তার বিষয়ে আমি নিশ্চিত হতে পারিনি।’

টিএসসির ঘটনায় ঢাবির ছাত্রী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘গত রোববার টিএসসি প্রাঙ্গণে অবস্থানকালে একটা ছেলে অনেকক্ষণ ধরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য করতে থাকে। একটা পর্যায়ে সীমা অতিক্রম করে আমার আরও নিকটবর্তী হয়ে অত্যন্ত অশালীন ও অভদ্র ইঙ্গিত দিতে থাকে।

‘এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি তার নিকট জবাবদিহিতা চাইলে উল্টো আমার ওপর আরও চড়াও হয়ে নানা হুমকি দিয়ে চলে যায়।’

ওই ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে তাকে আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে অবহিত করলেও সে তার অবস্থান থেকে নিবৃত্ত হয়নি।’

শিখা চিরন্তনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইবির ছাত্রী বলেন, ‘গত সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমি, আমার বন্ধু এবং বন্ধুর মা ঘুরতে আসি। বন্ধুর মা চলে যাওয়ার পর আমরা শিখা চিরন্তনের পাশে বসে নিজেদের মধ্যে আলাপ করছিলাম। এ সময় একটা বাইকে রাকিবসহ তিনজন ছেলে এসে আমরা ক্যাম্পাসের কি না জিজ্ঞেস করে।

‘পরে না বললে তারা আমার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে তাকে চড়-থাপ্পড় দেয়। আর দুইজন আমার সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে যৌন হয়রানি করে। আমি এটি সহ্য করতে না পেরে চেঁচামেচি শুরু করলে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে কী বলছেন রাকিব

টিএসসির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিএসসির ঘটনাটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেদিন আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে হাঁটছিলাম। হাঁটতে হাঁটতে আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার জন্য দাঁড়ালে আমার গার্লফ্রেন্ড সামনে এগিয়ে যায়। আর সেম পজিশনে সেই আপুটা দাঁড়িয়ে ছিল।

‘বন্ধুর সঙ্গে কথা শেষ করে সেই আপুকে আমার গার্লফ্রেন্ড ভেবে উনাকে বলি, চলো, আসো। যখন দেখি আসছে না, তখন আমি আপুর কাছে যাই। কাছে গিয়ে দেখি সে আমার গার্লফ্রেন্ড না, অন্য একজন। এটা দেখে তখন আমি হাঁটা শুরু করি। এরপর সেই আপু তার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমার কাছে কারণ জানতে চাইলে আমি সে সময় কারণও বলেছিলাম।’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত রাকিব বলেন, ‘সোমবারের এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। আমার সঙ্গে প্রতিদিন আমার গার্লফ্রেন্ড থাকে। সেদিন সোমবারও আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে ছিলাম। আমি সেই আপুকে ফেস করতেও রাজি।’

অভিযুক্তের এই বক্তব্য ইবির ছাত্রীকে জানালে তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই সম্ভব না। তিনজনের একজন রাকিবই ছিল। আর সেই রাকিবই সবচেয়ে বেশি উগ্র আচরণ করেছে। সে-ই সেই দলের নেতা ছিল। তার ছবি মাথা থেকে কোনোভাবেই যাচ্ছে না।’

এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত রাফাতের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

প্রক্টরের ভাষ্য

দুই অভিযোগের প্রথমটির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘টিএসসির ঘটনায় অভিযুক্ত রাকিবের কোনো ফোন নম্বর মেয়েটির (রওনক) কাছে আছে কি না, সেটি তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। আর রাকিবের বিস্তারিত তথ্য জানতে প্রক্টর অফিসকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

শিখা চিরন্তনের ঘটনা নিয়ে প্রক্টর বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী যৌন হয়রানি করলে সে (ভুক্তভোগী) আইনগত ব্যবস্থা নেবে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগীর ঘটনা তো আমরা সমাধান করতে পারব না।

‘ওরা তাদের মতো করে তাদের জায়গায় অভিযোগ দেবে আর আইনগত সহযোগিতা নেবে। ঘটনা সত্য হলে আমরা সহযোগিতা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর