ঈদের পর থেকেই সারা দেশে শুরু হয় সয়াবিন তেলের সংকট। ব্যবসায়ীরা তেল মজুত করে রাখায় বাজারে দেখা দেয় তেলের সংকট।
লুকিয়ে রাখা সেসব তেল জব্দে দেশজুড়ে অভিযানে নামে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বেরিয়ে আসতে থাকে বেশি দামে বিক্রির জন্য তেল লুকিয়ে রাখার প্রমাণ।
নিউজবাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, রাজধানী ছাড়া সারা দেশে গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে মজুত করা ১০ লাখ ৪১ হাজার ৪২২ লিটার ভোজ্যতেল।
কয়েক দিনের মতো শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন জায়গায় মজুত তেল জব্দে অভিযান চালানো হয়েছে।
নিউজবাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, দেশের আট জেলায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে মজুত করা ৪৭ হাজার ২৪০ লিটার ভোজ্যতেল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জেলার সরাইলে ২০ হাজার লিটার ভোজ্যতেল মজুতের দায়ে এক ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমের বিসমিল্লাহ অয়েল ভান্ডারের মালিক রমজান মোল্লাকে এ জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী (ভূমি) কমিশনার ফারহানা নাসরিন।
ভোলা
ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজারে শুক্রবার বেলা ১১টায় একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৩০০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে তা ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান অভিযান পরিচালনা করেন।
চট্টগ্রাম
জেলার কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে দোকানে মজুত করা দুই হাজার লিটার তেল জব্দ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এ সময় মজুমদার স্টোর নামের ওই দোকনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ।
কুমিল্লা
জেলায় পাঁচ লিটারের বোতলজাত তিন হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর এলাকার এক দোকানির বাড়ি থেকে এই তেল জব্দ করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম এ অভিযান পরিচালনা করেন।
ফরিদপুর
শহরের হেলিপ্যাড মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ৩০০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। ওই সময় দুই প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ দিনের জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
শুক্রবার দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ফরিদপুর ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সোহেল শেখ এ অভিযান পরিচালনা করেন।
মানিকগঞ্জ
অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুতের অপরাধে এক ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের মানিকগঞ্জ কাঁচাবাজারের কালীপদ অ্যান্ড সন্স প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল।
ওই সময় ১৩ হাজার লিটার তেল জব্দ করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ
জেলায় অবৈধ মজুত ও বোতলজাত সয়াবিন তেল খোলা অবস্থায় বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
শুক্রবার সকালে উপজেলার মুক্তারপুর ও পরে দুপুরে রিকাবীবাজারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই সময় রিকাবীবাজারের একটি দোকান থেকে মজুত করা দুই হাজার লিটার তেল জব্দ করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ।
নওগাঁ
জেলায় আগের দামের বোতলজাত তেল গোডাউনে সংরক্ষণ ও অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার দুবলহাটি বাজারে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন।
তিনি বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠানের গুদাম থেকে ৪০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করা হয়েছে।
নাটোর
জেলার বড়াইগ্রামে অভিযান চালিয়ে ৬ হাজার ৬০০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার জোনাইল বাজারে এই অভিযান চালানো হয়।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মেহেদী হাসান তানভীর এ অভিযান পরিচালনা করেন।