সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় পেট্রল দিয়ে আগুনে ঝলসে দেয়া সেই গৃহবধূ তামান্না খাতুন মারা গেছেন। তালাক দিয়ে অন্যজনকে বিয়ে করার প্রতিশোধ নিতে সাবেক স্বামীই তার গায়ে আগুন দিয়েছিলেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তামান্না। তিনি পাটকেলঘাটা থানার বড় কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল হকের মেয়ে।
গত ৫ মে সন্ধ্যায় বাড়ির পেছনে কপোতাক্ষ নদের পারে বর্তমান স্বামীসহ ওই গৃহবধূর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেন। এরপর থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন তামান্না।
তামান্নার মামা সাতক্ষীরা সদরের বাসিন্দা গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা গেছেন তামান্না। আমরা নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
গোলাম সারোয়ার দাবি করেছেন, পাটকেলঘাটা থানার এসআই লিটন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তাই তারও বিচার চান তিনি।
শরীরে আগুন দেয়ার ঘটনায় তামান্নার বাবা আব্দুল হক পাটকেলঘাটা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছিলেন। এই মামলায় তামান্নার সাবেক স্বামী মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাদ্দাম হোসেনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়।
প্রধান আসামি সাদ্দাম হোসেন কলারোয়া উপজেলার তুলসিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। গত রোববার তাকে ছাড়াও মামলার আরেক আসামি তুহিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ‘সাবেক স্বামী সাদ্দাম নিজের গায়েও পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছিল। পরে ওই গৃহবধূকেও জড়িয়ে ধরে। এ ঘটনায় গৃহবধূ, তার সাবেক ও বর্তমান স্বামী- তিনজনই দগ্ধ হন।’
এ ঘটনার মামলায় পালিয়ে বেড়ানো আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কৃষ্ণ বর্তমানে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে অবস্থান করছেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রধান আসামি সাদ্দাম হোসেনও সেখানে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া গৃহবধূর বর্তমান স্বামী ফরহাদ হোসেনও দগ্ধ অবস্থায় ওই বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন।