তালাকের প্রতিশোধ নিতে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় তামান্না খাতুন ও তার বর্তমান স্বামীর গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক স্বামীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার ভোররাতে পাটকেলঘাটার বড় কাশিপুর গ্রাম থেকে শেখ তুহিন হোসেন ও রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ পাহারায় সাবেক স্বামী সাদ্দামের চিকিৎসা চলছে।
গ্রেপ্তার হওয়া তুহিন পাটকেলঘাটার বড় কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল আলালের পুত্র এবং মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাদ্দাম হোসেন কলারোয়া থানার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও তামান্নার সাবেক স্বামী।
পুলিশ জানিয়েছে, তামান্নার পাশাপাশি নিজের শরীরেও পেট্রল ঢেলেছিলেন সাদ্দাম। পরে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে তিনি তামান্নাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। আর স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়েই দগ্ধ হন তামান্নার বর্তমান স্বামী ফরহাদ।
স্থানীয়রা জানান, ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে দুই বছর আগে ভিডিও কলের মাধ্যমে তামান্না ও সাদ্দামের বিয়ে হয়। কিন্তু তারা কখনও একত্রে থাকেননি। সাদ্দাম ছিলেন মালয়েশিয়ায়।
এক বছর আগে সাদ্দামকে তালাক দেন তামান্না এবং শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ১৫ এপ্রিল ফরহাদ ও তামান্না বিয়ে করেন।
তামান্নার বাবা আব্দুল হক জানান, সাদ্দাম তালাকের প্রতিশোধ নিতেই গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড় কাশিপুর এলাকার কপোতাক্ষ নদের পারে তামান্না ও তার স্বামীর গায়ে পেট্রল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় তিনি তামান্নার সাবেক স্বামী সাদ্দামসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার এসআই কৃষ্ণপদ সমাদ্দার জানান, এ ঘটনায় মামলার দুই নম্বর আসামি তুহিন এবং প্রধান আসামি তামান্নার সাবেক স্বামী প্রবাসী সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ‘সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেন তামান্নার গায়ে পেট্রল ঢেলে নিজের গায়েও ঢালে। তারপর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে বলে- মরলে একসঙ্গে মরব।
‘এ সময় তামান্নার বর্তমান স্বামী ফরহাদও দগ্ধ হন। সাদ্দামকে এ কাজে সহযোগিতা করেছে এজাহার নামীয় বাকি পাঁচজন।’