গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর তিন স্বজনদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসারদের বিরুদ্ধে।
ওষুধ দিতে ওয়ার্ডে প্রবেশ করা নিয়ে তর্কবিতকের জের দরে গত শনিবার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের ৮ম তলার পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এক মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালে একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন আনসার সদস্যের জটলা। সেখানে এক আনসার তার কোমরের বেল্ট দিয়ে এক রোগীর স্বজনকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। উপস্থিত অন্য সদস্যরাও অশ্লীল ভাষায় ভুক্তভোগীদের গালাগাল করছিলেন।
এ ঘটনায় হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হাসপাতাল সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ঈদের দিন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন শহরের সামন্তপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ২৭ বছর বয়সী ছেলে ইলিয়াস। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৫ মে রাতে আহত ইলিয়াসকে তাজউদ্দিন হাসপাতালের ৮১০ নম্বর পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
শনিবার রাত ৮টার দিকে ইলিয়াসের জন্য ঔষুধ নিয়ে তার বড় ভাই এমদাদ ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেন আনসার সদস্য শাহ জালাল। এক পর্যায়ে জোর করে ভেতরে ঢুকতে গেলে ওই আনসার সদস্য এমদাদের শার্টের কলার ধরে টেনে বাইরে এনে চড়থাপ্পড় মারেন। এমদাদও পাল্টা ঘুষি দেন আনসার শাহ জালালকে।
ক্ষুব্ধ হয়ে আনসার শাহ জালাল ফোনে অন্য আনসারদের ডেকে আনেন। পরে অন্যরা লাঠিসোটা ও কোমরের বেল্ট দিয়ে এমদাদকে মারধর করেন। এমদাদকে রক্ষা করতে গেলে হাসিব ও হাবিব নামে তাদের আরও দুই স্বজনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে এমদাদের বাবা মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে যান।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘খবর শুনে রাতেই আমি হাসপাতালে ছুটে আসি। পরে জানতে পারি, হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মঞ্জু মিয়া আমার পূর্ব পরিচিত। বিষয়টি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিয়াকে জানাই। তিনি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। পরে রাতেই আনসার কমান্ডারের অফিসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।’
হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘রোগীর স্বজনরা আনসার শাহ জালালকে মেরেছিল। বিষয়টি রাতেই মিমাংসা হয়ে গেছে। রোগীর স্বজনরা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন।’
শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. তপন কান্তি সরকার জানান, আনসার ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি উভয় পক্ষ মিমাংসা করে নিয়েছেন।