প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এই সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বাসচালকদের বিরুদ্ধে।
সময়মতো পৌঁছানোর তাগিদে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। এদিকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কিছু্ই জানে না প্রশাসন।
ঈদ শেষে রাজধানীতে ফিরছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। বাস টার্মিনাল দূরে হওয়ায় হেঁটে ছুটছেন অনেকে। এতে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে পাটুরিয়া বাস টার্মিনালে।
মানুষের তুলনায় বাস কম এখানে। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন চালকরা।
সরেজমিন দেখা যায়, পাটুরিয়া বাস টার্মিনালে শুভযাত্রা, সেলফি পরিবহন, নীলাচলসহ অন্যান্য লোকাল বাস যাত্রীদের অপেক্ষায় রয়েছে। যাত্রী দেখলেই হাঁকডাক করছেন তারা।
পাটুরিয়া থেকে গাবতলী যেতে ৩০০ টাকায় যাত্রীদের বাসে তুলতে দেখা গেছে। যারা কম দেয়ার কথা বলছেন, তাদের অন্য গাড়িতে যেতে বলা হচ্ছে।
মিরপুরগামী যাত্রী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘কুষ্টিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে আসলাম মাত্র আড়াই শ টাকা দিয়ে। আর পাটুরিয়া থেকে গাবতলী যাচ্ছি ৩০০ টাকা দিয়ে। বাসচালকরা সুযোগ পেয়ে ডাবল ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে। উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে।’
আমিনবাজারগামী এরশাদ মিয়া বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার সময় বেশ টাকা-পয়সা ছিল। ফেরার পথে তেমন টাকা থাকে না। সব খরচ করে শুধু গাড়ি ভাড়া রাখি। বাড়িতে আসতে আসতে প্রায় সব টাকা শেষ হয়ে গেছে, এখন হাতে কিছু টাকা আছে। বাড়তি ভাড়া দিয়ে গেলে পকেটে এক টাকাও থাকবে না। খুব চিন্তায় পড়ছি ঢাকা যাওয়ার জন্য।
‘যাত্রীদের জিম্মি করে প্রকাশ্যে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে, অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিষয়টি কেমন যেন লাগছে। যাত্রীদের কথা চিন্তা করে চালকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বাড়তি ভাড়া তো আদায় করছেই, সেই সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করছে। বাড়ি থেকে ফিরে এমনিতেই মন-মেজাজ খারাপ থাকে। তার মধ্যে বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।’
শুভযাত্রা পরিবহনের চালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে সবাই ৩০০ করে নিচ্ছে, তাই আমিও নিচ্ছি। অন্যরা নিলে আমি ঠকুম কেন। সবার খরচ তো একই।’
নীলাচল পরিবহনের চালক হেলাল মিয়া বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে পাটুরিয়া থেকে গাবতলী দেড় শ টাকা ভাড়া। যাত্রীদের কারণে ঈদের সময় একটু বাড়ে। যাদের টাকা আছে, তারা ৩০০ দেয়। আর যাদের টাকা নাই, তারা আড়াই শ করে দেয়। যাত্রীদের চাপ থাকলে একটু বেশি নেয় সবাই।’
বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’