কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টয়লেটে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার পরদিনই সন্দেহভাজন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
২০ বছর বয়সী এই ছেলের নাম মাছুম মিয়া। তিনি সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পরও তিনি ‘অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে’ হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে তার ছবি তুলে ভুক্তভোগী কিশোরীকে দেখায় বাহিনীটি। সে শনাক্ত করার পর তাকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে পুলিশ গোপনে তৎপরতা চালায়। আজ বিকালে আবারও সেই যুবক অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মেডিক্যাল এলাকায় ঘুরতে আসে।
তার ছবি তুলে ভুক্তভোগী কিশোরীকে দেখানোর পর তাকে শনাক্ত করে। তারপরেও সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।’
ঈদের রাতে হাসপাতালটিতে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত রাতে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলা হয়।
কিশোরীটির মা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ডাক্তার যখন ওয়ার্ড পরিদর্শনে আসেন, তখন রোগীর সঙ্গে থাকা বাড়তি লোকজদেরকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়া হয়।
স্বজনরা জানান, সে সময় ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষারত অবস্থায় অপরিচিত এক যুবক সেই কিশোরীকে নিচ তলায় নিয়ে যায়। যুবকের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে কিশোরীটি দৌড়ে চলে আসার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে মুখ চেপে ধরে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসক বের হয়ে যাওয়ার পর মেয়েটির বাবা খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে ছুটাছুটি করতে থাকেন। পরে তার সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে আসা লোকজনও খুঁজতে থাকেন। পরে মেয়েটির চিৎকারে নিচতলা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
আসামি মাছুম জানান, তিনি ঢাকায় থাকতেন। তিনমাস আগে বাড়িতে এসেছেন। ঘটনার দিন হাসপাতালে এসেছিলেন ঠিকই তবে তিনি ধর্ষণ করেননি। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এক যুবক মেয়েটিকে হাসপাতালের চারতলা থেকে নিচতলার একটি বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে তাদেরকে জানিয়েছেন কিশোরীটির বাবা।
তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি হাসপাতাল গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছি। নিচতলার একটি ফুটেজে দেখা গেছে অভিযুক্ত যুবক মেয়েটিকে সিঁড়ির কোণায় নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু মেয়েটি জোরাজুরি করছে।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার দিনই মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করে ধর্ষণের আলামত পেয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনটি সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করানো হবে।’