করোনার দুই বছরের ধকল কাটিয়ে এবার উৎসবের আমেজে উদযাপিত হতে যাচ্ছে ঈদ। রাজনৈতিকভাবেও এবারের ঈদ ভিন্ন মাত্রা পেতে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এই ঈদ রাজনৈতিকভাবে বেশ অর্থবহ।
ঈদে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সৌহার্দ্য বিনিময় ও উৎসবে শামিল হওয়ার সুযোগ মিলছে নেতাদের। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের মধ্যেও দূরত্ব ঘুচানোর মাধ্যম এবারের ঈদ। সব মিলিয়ে ঈদটি ‘পলিটিক্যাল ফ্লেভার’ পাচ্ছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্যরা ঈদ উদযাপন করতে নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় পৌঁছে গেছেন। চট্টগ্রামের এমপিরাও ব্যতিক্রম নন। বিএনপি নেতারা এবং জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও নেতারা এবার নির্বাচনি এলাকায় ঈদ উদযাপন করছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত দুই বছর ঈদ হলেও আমেজ ছিল না। মানুষ করোনার কারণে স্বাভাবিক ভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি। নেতারাও কর্মীদের সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেনি৷ তবে এবার করোনার বেড়াজাল নেই।
‘প্রতিটি ঈদই রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই এবার জনগণের সঙ্গে মেশার বিশেষ সুযোগ এনে দিয়েছে এই ঈদ। সামগ্রিকভাবে ঈদকে ঘিরে ফের রাজনীতি চাঙা ও প্রাণবন্ত হবে।’
ঈদের পরেই আন্দোলনের গতানুগতিক মন্তব্য থেকে সরে আসতে পারেনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি এর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিটি ঈদই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এবার ঈদ এলেও মানুষের মনে আনন্দ নেই। ভোগ্যপণ্যের লাগামহীন দামে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
‘দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে মানুষ মুক্তি চায়। ঈদের এই সময়ে জনগণের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত হয়ে নেতা-কর্মীরা আন্দোলনের পরিবেশ তৈরির একটি সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে নেতাদের কাছে পেয়ে কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে ঈদের পরে নির্বাচন নয়, সরকার পতনের আন্দোলনে শামিল হবে।’
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতাদের কাছে এবার ঈদটি ভিন্ন আবহের। ২০২৩ সালের নির্বাচন ও করোনা পরবর্তী ঈদ এই দুই কারণে ঈদটি রাজনৈতিকভাবে সদ্ব্যবহার করতে চান নেতারা।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে ঈদকে সদ্ব্যবহার করাটাই স্বাভাবিক। এ বছর ঈদ জনগণ ও কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের গভীরভাবে মেশার সুযোগ এনে দিয়েছে। এমপি ও নেতারা এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন৷ সামগ্রিকভাবে জনগণ নিয়েই এবার ঈদ উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ।’
চট্টগ্রামের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ঈদে সম্প্রীতি-সহমর্মিতা নেতাকর্মী ও জনগণের সঙ্গে ভাগাভাগি করাতেই আমার আনন্দ। মানুষের জন্য রাজনীতি, তাই ঈদও হোক মানুষের পাশে থেকে।’