ঈদের আগে তিন দিন ধরে ফেরিঘাটে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও আজ অনেকটাই ফাঁকা ঘাটগুলো। সোমবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ঘাটের চিত্র স্বাভাবিক। যান ও যাত্রীদের চাপ নেই। তাই ঈদের শেষ দিনেও ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরছেন মানুষ।
শিমুলিয়া
সোমবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের ঢল কমেছে, যানবাহনের চাপও নেই। ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে অর্ধশত ব্যক্তিগত গাড়ি ও শতাধিক পিকআপ ভ্যান। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের সারি দেখা গেলেও মাত্র একটি ফেরিতে করে পার করা হয়েছে সেগুলো।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মাহবুবর রহমান জানান, ঘাটে যাত্রীদের কোনো বাড়তি চাপ নেই। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিরকান্দি নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এ ছাড়া চালু রয়েছে ৮৫টি লঞ্চ, ১৫৪টি স্পিডবোট ও ৮টি ট্রলার।
দৌলতদিয়া
ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে কয়েক দিন ধরেই কর্মস্থল ছেড়েছে ঘরমুখো মানুষ। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে চার দিন ধরে ঘরমুখো মানু্ষের চাপ থাকলেও আজ সকাল থেকে ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে কোনো ভিড় দেখা যায়নি।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের অবস্থা স্বাভাবিক দেখা যায়। যান ও যাত্রীদের কোনো চাপ ছিল না। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার দিকে যাওয়া প্রতিটি ফেরিই ফাঁকা দেখা গেছে। লঞ্চগুলোতেও কোনো ভিড় নেই। অল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়েই পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া আসছে লঞ্চগুলো।
এ ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাটে পারের জন্য যানবাহনগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। যে যানগুলো ঘাটে আসছে সেগুলো সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছে। দৌলতদিয়া বাস টার্মিনালেও যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়েনি।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন,‘ দৌলতদিয়া ঘাট থেকে এখন ছোট-বড় ২০টি ফেরি ও ২১টি লঞ্চ চলাচল করছে। দুপুর পর্যন্ত ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ নেই।’
পাটুরিয়া
ঈদের আগে অনেকটা যাত্রী ও যানবাহনশূন্য দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটও।
সোমবার সকাল থেকেই এবার যাত্রী ও যানবাহনের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছে ফেরিগুলো।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দেখা যায়, যাত্রী ও যানবাহনের কোনো চাপ নেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে। ঘাটের পাশে মহাসড়কে নেই যানবাহন ভিড়। ঘাট এলাকার আশপাশের সড়কগুলোও ফাঁকা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ২১টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারপার করা হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে পাটুরিয়ার ৫টি ঘাট সচল রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, সকাল থেকেই পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা যাত্রী ও যানবাহনশূন্য। যাত্রী ও যানবাহনের জন্য ফেরিগুলোকে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের চাপে ঘাটে ফেরি আনলোড হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে লোড হয়ে যেত। এখন প্রায় ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করে ফেরি ছাড়তে হচ্ছে। বর্তমানে পাটুরিয়া ঘাট সম্পূর্ণ ফাঁকা এবং ২১টি ফেরিই সচল রয়েছে।’