বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গরমে অস্বস্তি, সড়কে স্বস্তি

  •    
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৪৬

নারায়ণগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক শরফুদ্দিন আহামেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুটি মহাসড়কের কিছু কিছু পয়েন্ট ছাড়া পুরো মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি পয়েন্ট হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। ঈদের ছুটি হলেও যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক রয়েছে।'

গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছে শিশু গোলাম রাব্বি। এত বছর সে ঈদ করেছে ঢাকায়। গ্রামে পরিবারের সকলের সঙ্গে ঈদ কেমন হয় জানা নেই ছোট্ট শিশুটির। তাই তো বাসের অপেক্ষায় প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে বারবার বলছিল ‘মা আমরা কখন বাড়ি যাব।’

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় একটি কাউন্টারের সামনে শুক্রবার দুপুরে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় শিশুটিসহ তার মা ও বোনকে। বাড়তি ভাড়া দিয়ে টিকিট কিনলেও সময়মতো গাড়ি না পেয়ে বিরক্ত বোধ করছিলেন তারা। কারণ, ঘণ্টাখানেক কাঠফাটা রোদে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত তারা।

কোথায় যাবেন? জানতে চাইলে সেই বিরক্তিটাই যেন প্রকাশ করলেন শিশুটির মা পোশাকশ্রমিক নাজমা বেগম। বলেন, ‘লাভ কী বলে, বাস এনে দিতে পারবেন? দেখছেন না ছেলেটা গাড়ির জন্য অস্থির হয়ে গেছে।’

কিছু সময় চুপ থাকার পর আবার বলতে থাকেন, ‘টিকিটের দাম বেশি নিল। তাও সময়মতো বাস আসে না। রাস্তার কী অবস্থা কে জানে। কুমিল্লা কখন ফিরব জানি না।’

নাজমার মতো ঈদে ঘরমুখো কিছু পরিবার ‘বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া’, ‘সময়মতো গাড়ি না পাওয়া’- এমন ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে সড়কে গাড়ির অপেক্ষা যেন তাদের এই ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তমা চৌধুরী। তার স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়া চট্টগ্রাম যাবেন। বাসে উঠবেন, তাই অপেক্ষা করছিলেন সাইনবোর্ড এলাকায়। তার কোলে আড়াই বছরের ছোট্ট শিশু সৌভাগ্য জৌতি। গরমে তার বেহাল দশা, কিছুক্ষণ পরপর ছেলের ঘাম মুছছিলেন তমা।

সড়কে ভোগান্তি হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এটা নতুন কী। একেক বছর একেক রকম ভোগান্তি আসে। আর ভাড়া তো প্রতি বছরই বাড়ে। যাই হোক পরিবারের সবাইকে নিয়া বাড়ি ফিরতে পারলেই শান্তি।’

তার মতো বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রণয় রায়ও। চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতে কে না চায়। তাই বাড়ি যাচ্ছি।’

তার হাতে থাকা ব্যাগ দেখিয়ে বলেন, ‘২ ঘণ্টা ধরে বসে আছি কিন্তু বাস আসেনি। কখন বাড়ি যাব, সেই চিন্তা করছি।’

ভাড়ার বিষয়ে সাইনবোর্ডে চট্টগামগ্রামী একটি বাসের কাউন্টারম্যান বলেন, ‘ঈদের সময় মানুষ থাকে বেশি কিন্তু গাড়ি কম। যেসব গাড়ি ছেড়ে যায়, সেগুলো অনেক সময় খালি চলে আসে ঢাকায়। তাই রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় ভাড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি নেয়া হয়।

‘অনেক সময় মানুষ এত বেশি থাকে যে বেশি ভাড়া দিয়েও অনেকে গাড়ি পায় না। যারা বেশি ভাড়া দিচ্ছে, তারা তো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি।’

শিমরাইল মোড়ের মৌলভীবাজারগামী একটি টিকিট কাউন্টারম্যান বলেন, ‘ঈদের সময় একটু ভাড়া বেশি না নিলে আমরা কেমনে চলমু। সবাই তো ঈদের সময় বেশি ভাড়া নেয়। শুধু আমরা না, সব গাড়িই বেশি ভাড়া নিতাছে, এটা নতুন কী? বন্ধ করলে সবগুলো বন্ধ করা দরকার। তাহলে সব গাড়িতে একই দামে টিকিট পাওয়া যাবে।’

ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন। সড়কে ভাড়া বেশি নেয়া, সময়মতো গাড়ি না পাওয়ার কথা জানা গেলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।

ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কিছুটা থাকলেও স্বস্তিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ।

তবে কিছু কিছু মোড়ে গাড়ির চাপ রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাচঁপুর পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও মদনপুর মোগরাপাড়া ও মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় গাড়ির চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

অপর দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের পুরিন্দাবাজার এলাকার মধ্যে তারাব বিশ্ব রোড ও রূপসীতে যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। তার মধ্যে অধিকাংশই পণ্যবাহী গাড়ি। এ দুই মহাসড়কেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ বাড়ছে।

নারায়ণগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক শরফুদ্দিন আহামেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুটি মহাসড়কের কিছু কিছু পয়েন্ট ছাড়া পুরো মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি পয়েন্ট হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। ঈদের ছুটি হলেও যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক রয়েছে।'

‘ধারণা করা হচ্ছে, কলকারখানা ও শিল্পকারখানা ছুটির পর দুটি মহাসড়কে মানুষের ঢল নামবে। তবে মানুষকে যানজটমুক্ত ঈদযাত্রা উপহার দিতে আমরা প্রস্তুত আছি। কোথাও যাতে মানুষ দুর্ভাগে না পড়েন, সে জন্য মোটরসাইকেল দিয়ে সড়কে টহল দেয়া হচ্ছে।’ যোগ করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর