বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাঠ ফিরে পেয়ে রত্না বললেন ‘লাভ ইউ বুবু’

  •    
  • ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:০৩

‘আমার বিশ্বাস ছিল, আমাদের এই দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি মাঠের পক্ষে থাকবেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, আমাদের কথাগুলো পৌঁছে দেয়ার জন্য। অবশেষে তার কাছে আমাদের কথাগুলো পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস সঠিক ছিল। লাভ ইউ বুবু। আপনাকে ধন্যবাদ।’

কলাবাগানের তেঁতুলতলার সেই ফাঁকা জায়গায় আপাতত থানা ভবন হচ্ছে না- এই ঘোষণা শোনার পর আনন্দে নেচে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দা, শিশু-কিশোর ও সংস্কৃতিকর্মীরা। নেচেগেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

মাঠে সীমানা দেয়াল নির্মাণ বন্ধ ও শিশুদের জন্য মাঠটি উন্মুক্ত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন ছিল।

মাঠে আসার পর খবর আসে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মাঠ যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে। মাঠে কোনো কনস্ট্রাকশন হবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে এই ঘোষণা আসার পর তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সৈয়দা রত্না প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল, আমাদের এই দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি মাঠের পক্ষে থাকবেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, আমাদের কথাগুলো পৌঁছে দেয়ার জন্য। অবশেষে তার কাছে আমাদের কথাগুলো পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস সঠিক ছিল। লাভ ইউ বুবু। আপনাকে ধন্যবাদ।’

তেঁতুলতলায় এক বিঘা জমি একজন বিহারির মালিকানায় ছিল। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি আর দেশে ফেরেননি। সেই জায়গাটিতে স্থানীয় শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করত।

সম্প্রতি সেই ফাঁকা কমিটি কলাবাগান থানা করতে বরাদ্দ দেয়া হয় পুলিশকে। এরপর গত ৩১ জানুয়ারি থেকে সেখানে স্থানীয়দের সব আয়োজন বন্ধ করে দেয়া হয়।

জায়গাটিতে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য রোববার থেকে মাঠের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

এরপর এলাকাবাসী মাঠ রক্ষায় আন্দোলনে নামেন। মাঠে থানা নির্মাণের প্রতিবাদ করায় গত রোববার সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে ঈসা আব্দুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। ওই মাঠ থেকে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সরকারি কাজে বাধা দেয়ায় তাদের দুজনকে আটকের প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর রাতে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

পুলিশের সেদিনের আচরণ স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ করেছে মানুষকে। এর পর থেকে প্রতিদিনই সেখানে নানা কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সংগঠন।

এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করে কয়েকজন পরিবেশকর্মী সেখানে থানা না করে মাঠ হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।

বুধবার সচিবালয়ে এই বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস না দিলেও বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। পরদিন তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী সেখানে আপাতত থানা করতে নিষেধ করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জায়গাটির জন্য অ্যাপ্লাই করেছি ২০১৭ সালে। সেটির খোঁজ নিয়ে দেখলাম, সেই এলাকায় খেলার জায়গাই নেই। প্রধানমন্ত্রীও পরামর্শ দিয়েছেন, যেহেতু খালি জায়গা নেই, বিনোদনের কিছু নেই, সে জন্য তিনি বলেছেন পুলিশের জমি সেভাবে থাকুক। কোনো কনস্ট্রাকশন যেন না হয়। যেভাবে চলছে চলতে থাকুক।’

মন্ত্রীর এই বক্তব্য আসার পর এই সিদ্ধান্তটিকে কলাবাগানের শিশু-কিশোরদের জন্য ঈদ উপহার বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন।

তিনি বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী আবারও প্রমাণ করলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা।’

মাঠটির উন্নয়ন করার জন্য স্থপতি ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সব আর্কিটেকচারাল সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

মাঠের উন্নয়নে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। জনগণের দাবির পক্ষে থেকে সুবিবেচক সিদ্ধান্ত দেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘মাঠ থাকবে না, শিশু-কিশোররা অপরাধে জড়াবে, কিশোর গ্যাং করবে, আর পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে, তা হতে দেয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘শিশুদের বিকাশের জন্য মাঠ প্রয়োজন। মাঠটি শিশুদের জন্য উন্মুক্ত থাকার ঘোষণা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’

ঈদের পর এই মাঠে এক পুনর্মিলনী করারও ঘোষণা দেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর