ঈদ করতে গ্রামে ফেরা শুরু হলো। ঈদের ছুটিতে বাড়ি অভিমুখী যাত্রীদের নিয়ে ঢাকা থেকে রাজশাহীর প্রথম ট্রেন আসলো ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট বিলম্বে। তবে, নানান বিড়ম্বনার পর রাজশাহী পৌঁছে যাত্রীরা বললেন, ভালোভাবে আসতে পারলাম এতেই সব কষ্ট ভুলে গেছি।
এদিকে, টিকিট যার যাত্রা তার এই নিয়ম করে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে টিকিট কাটা হলেও প্রথম দিনে এটি যাচাই বাছাইয়ে তেমন তৎপরতা ছিল না রেলকর্মীদের। অবশ্য তারা বলছেন, ঈদের পর এটি জোড়ালভাবে যাচাই করা হবে।
জানা গেছে, রাজশাহী পৌঁছানো ঈদযাত্রার প্রথম ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলে ছাড়ে সকাল ৬টায়। আর রাজশাহীতে ১১টা ৪০ মিনিটে পৌঁছার কথা থাকলেও ১ ঘন্টা ১০ মিনিট দেরি করে পৌঁছায় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে। তবু ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের চোখে মুখে ছিল স্বস্তির রেখা।
স্টেশন থেকে বের হওয়ার মুখে হারুন অর রশিদ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘টিকিট কেটেছিলাম অনলাইনে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করে টিকিট পেয়েছি। তিনজন আসলাম। যাত্রীতে ঠাঁসা কমলাপুর স্টেশনে প্রায় দুই ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে। তবে, এমন হয়রানির প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল। তাই হয়তো খারাপ লাগেনি। তা ছাড়া এক ঘণ্টা দেরি খুব বেশি নয়। বাড়ি আসতে পারলাম প্রথম দিনই এটাই ভাল্লাগছে।’
হারুন জানান, তিনি তার এনআইডি দিয়েই টিকিট কেটেছিলেন। ট্রেনে টিকিট চেক করলেও এটি তার নামে নাকি অন্য কারো নামে তা চেক করেনি কেউ।
হারুণ বলেন, ‘এত যাত্রীর এনআইডি পরীক্ষা করা সহজ কথা নয়।’
ফাতেমা বেগম নামে আরেক যাত্রীর কাছে যাত্রাপথের বিড়ম্বনার কথা জানতে চাইলে তিনি একগাল হেসে বললেন, ‘তুলনামুক কম। আমরা ভেবেছিলাম আরও বেশি বিড়ম্বনায় পড়বো।’
তিনিও জানালেন, টিকিট চেক করার সময় তার কাছে কেউ এনআইডি চায়নি।
আব্দুল জাব্বার জানালেন, তিনিও অনলাইনেই টিকিট কেটেছিলেন। টিকিট পেতে খুব একটা ঝামেলা হয়নি তার। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগেই স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। ট্রেন ছাড়তে কিছুটা দেরি হয়েছে। এ কারণে স্টেশনেই কেটেছে প্রায় তিন ঘণ্টা।
রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল করিমও জানালেন, এনআইডি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই স্টেশনে। এটি ট্রেনেই পরীক্ষা করা হবে। তবে, এখনও এটি জোড়ালভাবে যাচাই-বাছাই শুরু হয়নি। ঈদের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। টিকিট পরীক্ষা ছাড়াও অতিরিক্ত যাত্রী ওঠা, ছাদে যাত্রী ওঠা বন্ধে বিশেষ গুরুত্ব থাকবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর থাকবে।
তিনি বলেন, ‘টিকিট যার তিনিই যাত্রী হবেন এটাই এখন কার্যকর হবে। তবে, এক নামেতো একজন চারটি টিকিট কাটতে পারবেন। চারজন যাত্রীর মধ্যে একজনের এনআইডি থাকলেই চলবে।’
এ ছাড়া যাত্রীদের বাড়তি চাপ সেই সঙ্গে ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ট্রেনের কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানালেন স্টেশন ম্যানেজার।