কলাবাগানের তেঁতুলতলায় যে স্থানে স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করে সেখানে থানা তৈরির সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। পুলিশের এই উদ্যোগের সমালোচনা করায় মা ছেলেকে থানায় বন্দি রাখারও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘ওরা কাপুরুষ।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনা এবং ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার কলাবাগান থানা করা নিয়ে ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি।
নয়া পল্টন ভাসানী ভবনে এর আয়োজন ছিল ‘জিয়া মঞ্চ’ নামে বিএনপিপন্থি একটি সংগঠন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ওরা কাপুরুষ। কলাবাগানে মাঠে শিশুরা খেলাধুলা করবে, সেই মাঠ তারা রাখবে না, পুলিশ স্টেশন স্থাপনা করবে।
‘সেখানে একজন প্রটেস্ট (প্রতিবাদ) করেছে বলে শিশুসহ মহিলাকে ধরে নিয়ে গেছে। কেন?
‘বাহ! ঢাকা থেকে খেলার মাঠ, পানির লেক, পরিবেশ রক্ষা করার গাছ থাকবে না। আর মানুষ প্রতিবাদ করবে না। প্রতিবাদ করলে মা ছেলে কে থানায় আটকে রাখবে। সাংবাদিকরা ওসিকে জিজ্ঞেস করেছিল কী মামলা? ওসি উত্তর দিতে পারেননি।’
নিউ মার্কেটের দোকানিদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েও কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আমরা এক বর্বর আদিম যুগে বাস করছি। নিউমার্কেটের ঘটনায় হেলমেট ধারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে, অথচ মামলা দিল বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে। সন্ত্রাসী করছে ছাত্রলীগ, আর মামলা দিচ্ছে বিএনপির নামে।
‘কই পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি দিতে দেখলাম না। কারণ, আপনারা জনগণের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট না। আপনারা শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনী। একেবারে ব্যক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনী বলেই আজকে এই আচরণ করছেন।’
এই সরকারের সঙ্গে জনগণ নাই মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এরা তো ভোটের ভিত্তিতে ক্ষমতায় নাই। এ সরকারের কাছ থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
‘জনগণ ত্যাগ করেছে, এটা সরকার ভালো করেই জানে বলে এখন পুলিশের উপর নির্ভরশীল। তাই যত অনাচার-অবিচার করে, সেখানে সরকারের কোনো দায় থাকে না, বরং প্রশ্রয় দেয়।’
পুলিশের উদ্দেশে রিজভী বলেছেন, ‘আপনাদের ভেতরে মানবতা নেই। আর মানবতা নেই বলেই আপনারা সকল শক্তি দিয়ে শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখছেন। কারণ, শেখ হাসিনার টিকে থাকলে তাদের সকল অবৈধ কর্মকান্ড টিকে থাকবে।
‘এই জন্য শেখ হাসিনা জনগণকে তোয়াক্কা করেন না, গণতন্ত্রকে তোয়াক্কা করেন না, নির্বাচনকে তোয়াক্কা করেন না, ভোটকে তোয়াক্কা করেন না।
‘একমাত্র তোয়াক্কা করেন পুলিশ ও র্যাবকে। এই পরিস্থিতি চলতে পারে না। এই অন্যায় অবিচারের পতন হবেই।’
রিজভী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের রাজনীতির মূল লক্ষ্য একটাই, সেটা হলো মানবকল্যাণ।’
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আবদুর রহিম, জিয়ামঞ্চের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে দুঃস্থদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন রিজভী।