ঈদযাত্রার প্রতিটি ট্রেনের জন্য অনলাইনে দেয়া হচ্ছে সাড়ে তিন শ টিকিট; তবে এর বিপরীতে টিকিটপ্রত্যাশী প্রায় লাখ খানেক মানুষ।
অনলাইনে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ নিয়ে সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে আমরা ২৭ হাজার ৭০০ আসনের টিকিট বিক্রি করছি। এর অর্ধেক অনলাইনে এবং অর্ধেক কাউন্টারে বিক্রি করা হচ্ছে।’
স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ বলেন, ‘যখন সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট দেয়া শুরু হয়, তখন এক সঙ্গে অনেক মানুষ হিট করেন; যে কারণে সার্ভার জ্যাম হয়ে যায়। এ কারণে অনেকেই সেই সময় সার্ভারে ঢুকতে পারেন না।’
পরেও টিকিট পাওয়া যায় না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ট্রেনের সাড়ে ৩০০ সিট অনলাইনে বরাদ্দ রয়েছে। সহজ থেকে জানানো হয়েছে, এই আসনের বিপরীতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার বা কখনও কখনও এক লাখ গ্রাহক সার্ভারে হিট করছেন।
‘সাড়ে ৩০০ টিকিটের জন্য যখন ৭০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ ওয়েবসাইটে হিট করছেন, তখন টিকিট পাচ্ছেন না। যার কারণে যারা পাচ্ছেন না, তারা বলছেন যে, অনলাইনে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।’
কালোবাজারির অভিযোগ প্রসঙ্গে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকটা মানুষের টিকিট নিশ্চিত করতে সচেষ্ট আছি। জন্য কাউন্টার এবং অনলাইনে ছাড়া টিকেট পাওয়ার সুযোগ নেই। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ রেলওয়েল লক্ষ্যই হচ্ছে, যাত্রীরা কাউন্টার থেকে টিকিট পান। আমরা সেটা নিশ্চিত করেছি।’
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার। ছবি: নিউজবাংলা
টিকিট বিক্রিতে ধীরগতি নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২৩টা কাউন্টারে একযোগে টিকিট দেয়া হচ্ছে। এনআইডি নম্বর ইনপুট দিতে হচ্ছে, তাই দেখেশুনে দিতে হচ্ছে যে, কোনো ভুল হচ্ছে কি না।’
টিকিটের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা বেশি, তাহলে ট্রেনের সংখ্যা বা আসন সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম থেকে আমরা জেনেছি প্রায় এক কোটি লোক ঢাকা ছাড়বে। আমাদের ক্যাপাসিটি কিন্তু ২৭ হাজারের মত আন্তনগর সিট। সেখানে যদি পাঁচ লাখ লোক বা ১০ লাখ লোক ভ্রমণ করতে চান, সেটা কিন্তু সম্ভব না।’
স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে অতিরিক্ত ট্রেন সংযোজনের চেষ্টা করছে। আমরা স্পেশাল ট্রেন চালু করেছি। পঞ্চগড়ে হচ্ছে, চার বছর আগেও কিন্তু ট্রেন ছিল না; সেটা হয়েছে। আগামীতে আরও সংযোজনের চেষ্টা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন সংযোজন ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে খুলনাগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেন। এর টিকিট সোমবার থেকে দেয়া হচ্ছে।’
এবারের ঈদযাত্রার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় শনিবার সকাল ৮টায়। ওই দিন দেয়া হয় ২৭ এপ্রিলের টিকিট। রোববার টিকিট দেয়া হয় ২৮ এপ্রিলের। সোমবার দেয়া হচ্ছে ২৯ এপ্রিলের টিকিট।
যাত্রীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ঢাকা শহরের পাঁচটি কেন্দ্রে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। স্থানগুলো হলো কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।