জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতায় যে কলেজে পড়েছেন, সেই সাবেক ইসলামিয়া কলেজ বা বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজে বিশ্ববরেণ্য এই ছাত্রের জন্ম শতবর্ষের শ্রদ্ধা জানাতে একটি আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়।
শনিবার মৌলানা আজাদ কলেজের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা চক্রে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুল রহমান এবং কলেজের অধ্যাপক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে বাংলা শুধুমাত্র একটা শব্দ ছিল না। তার কাছে বাংলা ছিল একটা দর্শন। তিনি ছিলেন আমার কাছে একজন শিক্ষক। বাংলা সাহিত্যকে অনুবাদ করে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববন্দিত এই নেতাকে পাকিস্তানের জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে ফাঁসি দেয়ার প্রস্তুতিতে কবরও খোঁড়া হয়েছিল, পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তার দেহ যেন বাংলাদেশের মাটিতে কবর দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার গভীরতা ছিল এতটাই।’
আলোচনা চক্রে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন
কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আশরাফুল রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়, তিনি ছিলেন দুই বাংলার বন্ধু। তার মানসিক বিকাশে এই কলেজের একটা অবদান রয়েছে।’
কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন, এই কলেজের ছাত্র সংসদের সভাপতি। কলেজের হোস্টেলে থাকতেন। একটি জাতিকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র কিছু অংশ পাঠ করে শোনান কলেজের ছাত্ররা।
কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে তাদের দাবি নিয়ে লড়াই করেছিলেন, কীভাবে ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় কলকাতাসহ অন্যান্য এলাকার দাঙ্গাপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন– বক্তারা তা তুলে ধরেন।