বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতক ভাগনিকে দেখতে চাওয়ায় মামা ও খালুকে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও হাসপাতালের স্টাফদের বিরুদ্ধে।
শনিবার বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুজনে কথা বলছিল। এর মধ্যে হাসপাতালের স্টাফ ও আনসার সদস্যরা মিলে তাদের মারধর করেছে। তাদের আটকে রাখা হয়েছে।
হামলার শিকার রোগীর স্বজন আশরাফুল হক মুন্না বলেন, ‘আমার ভায়েরার নবজাতকের নাভিতে সমস্যা হওয়ায় স্বরূপকাঠি থেকে বরিশালে রেফার্ড করা হয়। বেলা ৩টার দিকে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
‘আমি ও আমার শ্যালক রাসেল সাড়ে ৪টার দিকে নবজাতক ওয়ার্ডের সামনে এসে দাঁড়াই। ওয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকের কাছে ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাইরে বের করে দেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি তার কাছে ভুল স্বীকারও করেছি। বলেছি, ভাই ভুল হয়েছে হয়তো, আমি হাসপাতালের নিয়ম জানি না। কিন্তু সেই গার্ড আমার কথা না শুনে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আমাকে মারধর শুরু করে।
‘আমরা কোনো দোষ করিনি, তার পরও মাফ চেয়েছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা? মারধর করল।’
মারধরের শিকার রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভাগনি অসুস্থ হয়ে ভর্তি। আমার দুলাভাই তাকে দেখতে ভেতরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাইলে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাসপাতালের স্টাফ মেহেদী ও কয়েকজন আনসার সদস্য মারধর শুরু করে। আমি মারধর ঠেকাতে গেলে স্টাফ মেহেদী ও আনসার সদস্যরা আমাকেও মারধর করে আটকে রাখে। শুধু মারধর না, হামলাকারীরা বলেছে, আমাদের রোগীকে চিকিৎসা দেবে না।
‘আমরা আতঙ্কে আছি এ ঘটনায়। তারা ভর্তির কাগজ নিয়ে আটকে রেখেছে।’
ইউনিসেফ প্রকল্পে হাসপাতালে কর্মরত অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বলেন, ‘নবজাতক ওয়ার্ডের গেটের কাছে আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন এসে দুজনে আমাকে ও ওয়ার্ডের ক্লিনারের ওপর হামলা চালায়। তারা হাসপাতালের স্টাফের গায়ে হাত তোলায় তাদের আটকে রাখা হয়েছে।’
অভিযুক্ত আনসার সদস্য অভিষেক মুজমদার বলেন, ‘হাসপাতালের স্টাফরা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের ওপর হামলা হয়েছে। সে কারণে রাসেল ও মুন্না নামে দুজনকে আটকে রাখা হয়েছে।
‘তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হবে। তারা এখান থেকে তাদের রোগী নিয়ে যাবেন, অন্যথায় তাদের রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হবে না।’
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘তিনি ঘটনাটি পুরোপুরি জানেন না। হাসপাতালের কারও দোষ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’