ঈদ সামনে রেখে যাত্রী ও ফেরি পারাপারের সুবিধার জন্য মাঝিরঘাট লঞ্চঘাট স্থানান্তর করা হয়েছে। মাঝিরঘাটে নতুন করে আরও একটি ফেরিঘাট নির্মাণ ও লঞ্চ চলাচলে ঝুঁকি কমাতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে স্থাপন করা লঞ্চঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার শুরু করেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটের ইনচার্জ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সার্জন আবদুল্লাহ ইনয়াম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় মাঝিরঘাট ফেরিঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপারের সুবিধার্থে নতুন করে আরও একটি ফেরিঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে এই ঘাটে থাকা একমাত্র ঘাটের পাশে লঞ্চঘাট সরিয়ে নতুন এই ঘাটের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।’
নতুন ফেরিঘাট স্থাপনের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটটি বর্তমান অবস্থান থেকে ২০০ মিটার পূর্বদিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সকাল থেকে নতুন ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। যাত্রীদের নতুন ঘাট ব্যবহার করে চলাচল করতে ঘাট এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
বর্তমানে মাঝিরঘাট-শিমুলিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাঝিরঘাট ফেরিঘাট ব্যবহার করে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঈদের সময় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। পদ্মা পারাপারে যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এই ঘাটে নতুন করে আরও একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে নতুন এই ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল শুরু করা হবে। গত বুধবার থেকে নতুন ফেরিঘাটের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।
ফেরিঘাটের কাছ থেকে লঞ্চঘাট সরিয়ে নেয়ায় দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় যাতায়াতে কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। নতুন ঘাট থেকে প্রায় ২০০ মিটার অতিরিক্ত পায়ে হেঁটে যানবাহনে উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে এ নিয়ে আক্ষেপ নেই ভুক্তভোগী যাত্রীদের। ফেরির সঙ্গে সংঘর্ষের শঙ্কা এড়িয়ে ফেরিঘাট থেকে নিরাপদ দূরত্বে লঞ্চঘাট সরিয়ে নেয়ায় খুশি এই রুটে চলাচলকারীরা।
ঢাকা যাওয়ার পথে মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটে কথা হয় শরীয়তপুরের ব্যবসাযী সোলায়মান শিকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে থেকে কোনো ঘোষণা না দিয়ে লঞ্চঘাট সরিয়ে নেয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। মালামাল নিয়ে অন্তত ২০০ মিটার হেঁটে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে।
‘তবে ঘাটটি স্থানান্তর হওয়ায় লঞ্চ চলাচলে ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে। ফেরি ও লঞ্চ পাশাপাশি থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।’
লঞ্চে কথা হয় ষাটোর্ধ্ব আমিরুন বিবির সঙ্গে। তিনি নিউজ বাংলাকে জানান, ‘লঞ্চঘাট বদলাইয়া হালাইছে (ফেলেছে) তা আগে জানতাম না। এই রোদের ভেতর পুরান ঘাটে গিয়া আবার ফেরত আইতে হইছে। আমাগো অনেক কষ্ট হইতাছে। নতুন ঘাটের কাছে বাস আইতে পারলে আমাগো উপকার হইতো।’
মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটের ইজারাদার মোকলেছ মাদবর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে ঘাট পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাট এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। যাত্রীদের নতুন ঘাটে চলাচলের সুবিধার্থে লঞ্চঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার হওয়া জরুরি।’
মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটের বিআইডব্লিউটিএর ইনচার্জ আবদুল্লাহ ইনয়াম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নতুন ফেরিঘাট নির্মাণের জন্য লঞ্চঘাটটি সরিয়ে আনা হয়েছে। আগের স্থানে ফেরিঘাট নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে। শিমুলিয়া-মাঝিরঘাট নৌরুটে বর্তমানে ২০টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
‘প্রতি ২৫ মিনিট পরপর মাঝিরঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে একটি করে লঞ্চ ছেড়ে যায়। আশা করি ঈদের সময় যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে সক্ষম হব।’