ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের সাপ্তাহিক দুটি বড় হাট নেকমরদ ও কাতিহার হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত করেন ইজারাদাররা।
এমন অভিযোগ এনে উপজেলা গেটের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শত শত মানুষ। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
কর্মসূচি থেকে খায়রুল বাসার বলেন, ‘আমি একজন স্কুলশিক্ষক। গত রোববার গরু কিনতে নেকমরদ বাজারে গেলে ইজারাদার ও তাদের লোকজন অপমান করে। কারণ তারা সরকারের দেয়া নির্ধারিত টোলের চেয়ে বেশি টোল নিচ্ছিল। আর এ অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করায় আমাকে গালাগাল শুনতে হয়েছে। আমি এর সুরাহা চাই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, আমি সরকারের অধীনে চাকরি করি৷ সরকারের নিয়মকানুন মেনে চলি। কিন্তু কাতিহার বাজারে নাতির আকিকার জন্য ছাগল কিনতে গেলে আমাকে ন্যক্কারজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।
‘তারা সরকারের নির্ধারিত ৯০ টাকার বদলে ২০০ টাকা আদায় করছে। আমি এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলে নিলে নেন না নিলে ছাগল রেখে চলে যান।’
কিসমত আলী একজন দিনমজুর। একটি ছাগল বিক্রি করতে গিয়েছিলেন নেকমরদ হাটে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জিম্মি করে রাখছে হাট ইজারাদাররা। যারা বিক্রি করছে এবং যারা কিনছে দুপক্ষের কাছ থেকেই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এগুলো দিনেদুপুরে ডাকাতি করা হচ্ছে।’
এই আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে রানীশংকৈল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা জনপ্রতিনিধিরা এর দায় এড়াতে পারি না। মানুষ যদি সঠিক পথ অনুসরণ করেও হেনস্তার শিকার হন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে এর জবাব দিতে হবে।
‘অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নিজে হাট দুটি পরিদর্শন করেছি এবং আমার নিজ চোখে এ লুটপাট দেখেছি৷ আমি বলতে চাই, উপজেলা প্রশাসন শুধু জরিমানা না করে যাতে আর কখনও হাটগুলোয় অতিরিক্ত টোল তুলতে না পারে সেদিকে সোচ্চার হয়।’
এ বিষয়ে নেকমরদ হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদের অতিরিক্ত টোল নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘গোটা জেলায় যেমন বেশি নিচ্ছে, আমিও তেমন বেশি নিচ্ছি।’
তবে অভিযোগের বিষয়ে কাতিহার হাটের ইজারাদার বিপ্লব হোসেনের বক্তব্য পায়নি নিউজবাংলা। তাকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুলকার নাইন কবির স্টিভ নিউজবাংলাকে বলেন, হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে। এর পর থেকে অতিরিক্ত টোল নিলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্মরকলিপি পাওয়ার কথা জানিয়ে ইউএনও বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠানো হবে।