বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নড়াইলে বিএনপির দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২০ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৪৬

নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির দুই গ্রুপ একই দিনে কর্মসূচি আহ্বান করায় সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি।’

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নড়াইল জেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। আগামী ২৬ এপ্রিল নড়াইল সদর থানা ও পৌর বিএনপির ইফতার এবং সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চলছে উত্তেজনা।

দুই গ্রুপ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে একই দিনে কর্মসূচি আহ্বান করেছে।

ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

নড়াইলে বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নড়াইল সদর থানা ও পৌর বিএনপির ইফতার এবং সম্মেলনের অনুমতি চেয়ে গত ১৭ এপ্রিল পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

একই দিনে, একই স্থানে ইফতার মাহফিলের অনুমতি চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোরশেদ তৌহিদ সোহেল ও সদস্য সচিব খন্দকার কিয়ামুল হাসান।

ফলে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির দুই গ্রুপ একই দিনে কর্মসূচি আহ্বান করায় সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি।’

এদিকে, জেলা বিএনপিসহ লোহাগড়া, কালিয়া ও সদর উপজেলা এবং পৌর বিএনপির তিনটি শাখা ছাড়াও ৩৯টি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে এই দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে। পৃথক কর্মসূচিও পালন করে তারা।

জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, জ্যেষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ এবং গত সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে বিএনপি মনোনয়নপ্রাপ্ত শরীফ কাসাফুদ্দোজা কাফী একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঘোষিত জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক কমিটি মেয়াদউত্তীর্ণ হলেও নতুন করে কমিটি গঠিত না হওয়ায় যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ছাড়া ২০০৮ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বশেষ লোহাগড়া, কালিয়া ও সদর উপজেলা এবং পৌর বিএনপির তিনটি শাখা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠিত হয়। এরপর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২০২১ সালের ১৮ মে তিনটি উপজেলা ও পৌর বিএনপিসহ সাতটি শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি, কোনো আলোচনা ও পরামর্শ ছাড়াই জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের সুবিধামতো সাতটি শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তাদের দাবি, এই কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে ‘পকেট কমিটি’ ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি ঘোষণার পর ওই বছরের ২২ মে দুপুরে নড়াইলের কালিয়া এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

চলতি বছরের প্রথমদিকে ঘরে বসে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি ঘোষণা করা হলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এটিও ‘পকেট কমিটি’ হিসেবে মূল্যায়ন করে তা প্রত্যাখানের জন্য মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে।

জেলা বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুশ কাশেম, লোহাগড়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মফিজুর রহমান, পৌর শাখার আহবায়ক সৈয়দ আব্দুস সবুর, সদস্য সচিব শামসুল হক আজাদ, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নায়েব আলী, দিঘলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলীসহ তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, সম্মেলন না করে অযোগ্যদের নেতৃত্বে ‘পকেট কমিটি’ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কমিটি কোনো ভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।

মেয়াদউত্তীর্ণ জেলা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি দেয়ার আহ্বান জানান তারা। কারণ, জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তেমন কোনো দলীয় কর্মসূচি পালন করেন না। জেলা বিএনপির কার্যালয় খুলতে পারেন না। এ ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যোগ্যদের নিয়েই বিভিন্ন শাখার আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে এবং পুলিশি বাঁধায় দলীয় অনেক কর্মসূচি করতে পারি না। তারপরও কেন্দ্র ঘোষিত অনেক কর্মসূচি আমরা পালন করছি।’

জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল বলেন, ‘আমরা প্রথম কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেই ও অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করি। পরে একই তারিখে ও স্থানে তারা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

‘যেহুতু আমরাই প্রথমে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই নির্ধারিত তারিখেই আমরা তা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর