নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে শিশু তাসকিয়া হত্যার প্রধান অভিযুক্ত রিমন ও মহিন উদ্দীনসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলার চর জব্বর থানাধীন চর ক্লার্ক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন, মামলার ৪ নম্বর আসামি আকবর, ৫ নম্বর আসামি সুজন ও ১০ নম্বর আসামি নাইম।
র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শামীম হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি, দেশীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়।’
খন্দকার শামীম হোসেন জানান, বুধবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গুলি ও আঘাত করে গত ১৩ এপ্রিল বিকেলে হত্যা করা হয় বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব হাজিপুর গ্রামের চার বছর বয়সী তাসকিয়াকে। হামলায় ডান চোখ হারান শিশুটির বাবা আবু জাহের।
তাসকিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুন উদ্দিন রিমন। ছবি: নিউজবাংলা
পরদিন তাসকিয়ার খালু হুমায়ুন কবির ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের ২৪ বছর বয়সী মামুন উদ্দিন রিমনকে। এই তরুণের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ নয়টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রিমনের নেতৃত্বে এই এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। এই বাহিনীর সদস্যরা মাদক কারবারে জড়িত। একইসঙ্গে প্রত্যেকে মাদকসেবী। কোনো কারণ ছাড়াই লোকজনকে মারধর, চাঁদাবাজি ও নারীদের উত্ত্যক্ত করা থেকে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা ওরা করে না। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতেও দেখা গেছে তাদের।
আরও পড়ুন : তাসকিয়া হত্যা: প্রধান আসামি রিমনে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা
রিমনসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের কয়েকজনকে পুলিশ একাধিক বার গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বেরিয়ে এসে ওরা আবারও একই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার তথ্য অনুযায়ী, চাঁদাবাজি, মাদক, হত্যা, মারামারি ও অস্ত্র আইনে রিমনের নামে নয়টি মামলা রয়েছে।
তাসকিয়া হত্যা মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে মহিন উদ্দিনের নামে সাতটি ও মো. রহিমের নামে দুইটি এবং মো. সুজন, মো. শাকিল, হেদায়েত উল্ল্যাহ সাগর ও মো. সম্রাটের নামে একটি করে মামলা আছে। এরা সবাই রিমনের দলের সদস্য।
থানা সূত্র আরও জানায়, ২০১৯ সালে হাজিপুর ইউনিয়নের কালামিয়ার পুলে শাহাদাত ও ২০২০ সালে কুতুবপুর ইউনিয়নে বিয়ের আসরে মাহফুজ নামের আরেক যুবককে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রিমন, মহিন ও রহিমকে গ্রেপ্তার করে।