বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাড়ির আঙিনা-ফসলি মাঠে শিলার ‘কার্পেট’

  •    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:৪৬

কৃষক জয়নাল মিয়া বলেন, ‘আমি দেড় একর জমিত ধান লাগাইছিলাম। ফলন তো বালাই হইছিল। কিন্তু শিলে তো সব শেষ। আমরা এক সিজন আবাদ করে সংসার চালাই। আমরা যেনে আবাদ করি এইডা নামা জায়গা। এল্লা বৃষ্টি হইলেই পানি ওডে। কয়দিন পরেই ধান কাটতাম। সব তো শেষ হয়ে গেল। এহন পোলাপানের লেহাপড়ার খরচ কী দিয়া চালামু।’

শেরপুরে মধ্য রাতে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে শুরু হয়ে ঘণ্টাব্যাপী শিলাবৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি উপজেলার ফসলি মাঠ। শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয়দের বাড়িঘরও।

কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে সাদা হয়ে গেছে ফসলের মাঠ, বাড়ির আঙিনা; যেন বিছিয়ে রাখা হয়েছে সাদা গালিচা। মাটিতে নুইয়ে পড়েছে ধান, গম, কলা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলি গাছ। শিলাবৃষ্টির আঘাতে ছিদ্র হয়ে গেছে ঘরের টিনের চালা।

স্থানীয় কৃষকরা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানালেও কৃষি বিভাগ বলছে ক্ষতি হয়েছে সামান্য।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, শেরপুরে চলতি মৌসুমে ৯১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে ১০০ হেক্টর ধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া গ্রামের কৃষক নাঈম ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে এমনিতেই ধান আবাদ কইরা লোকসানে আছি। আর এর মধ্যে শিলা পইড়া যে ক্ষতি হইল তা পূরণ করা সম্ভব না। ধান সব পইড়া গেছে, এখন বউ-বাচ্চা নিয়ে কি খাব।’

কুরুয়ার কৃষক মফিল উদ্দিন বলেন, ‘এহন কলার দাম বেশি। তার জন্য আমি এল্লা কলার বাগান করছিলাম। শিল পইড়া কলার ছড়ি নষ্ট হইয়া গেছে। বাতাসে গাছ উল্টায় গেছে গা। এহন তো উল্টা গাছে আর কলা ধরব না।’

হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘চিন্তায় পড়ে গেলাম, আবাদটাতে এহন লোকসান অইব।’

কৃষক জয়নাল মিয়া বলেন, ‘আমি দেড় একর জমিত ধান লাগাইছিলাম। ফলন তো বালাই হইছিল। শিলে আমারতো সব শেষ। আমরা এক সিজন আবাদ করে সংসার চালাই।

‘আমরা যেনে আবাদ করি এইডা নামা জায়গা। এল্লা বৃষ্টি হইলেই পানি ওডে। কয়দিন পরেই ধান কাটতাম। সব তো শেষ হয়ে গেল। এহন পোলাপানের লেহাপড়ার খরচ কী দিয়া চালামু।’

কৃষক চান মিয়া বলেন, ‘ঋণ কইরা এক একর জমিতে ধান লাগাইলাম, এখন তো শিলে সব শেষ। এহন ঋণ কিভা কইরা পরিশোধ করমু। বউ পোলাপান নিয়া না খাইয়া দিন কাটান লাগব।’

মোবারকপুরের কইন্না পাড়া গ্রামের কবির মিয়া বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। ভোররাতে শিল পইরা আমগর এলাকার মেলা জনের টিনের চাল শেষ। টিনের চাল দিয়া সূর্য দেখা যাইতাছে। আমরা দিন আনি দিন খাই। কি করমু এহন। সরকারের কাছে সাহায্য চাই।’

শেরপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক ড: মুহিদ কুমার দেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শেরপুরে এ মৌসুমে ধানের ভালো আবাদ হয়েছে। তবে ভোর রাতের ঘণ্টাব্যাপী দমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে জেলায় প্রায় ১০০ হেক্টর জমির ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে।

‘আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছেন। পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর