বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোন পথে অর্থনীতি: মূল্যায়নে বসছে সরকার

  •    
  • ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ২১:৫৯

সরকারের রাজস্ব আয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন, মুদ্রাবাজারে মুদ্রার সরবরাহ ও ভারসাম্য ইত্যাদি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছে অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল। জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের আগে এ ধরনের বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

কোন পথে রয়েছে দেশের অর্থনীতি– এ নিয়ে খোদ সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে এখন নানান প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। সরকারের অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছে রোববার।

চলতি অর্থবছরের শেষ সময়ে দাঁড়িয়ে সরকারের রাজস্ব আয় কোন পর্যায়ে? বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন কতটা হয়েছে? মুদ্রাবাজারে মুদ্রার সরবরাহ ও ভারসাম্য কী অবস্থায় রয়েছে এবং সার্বিক মুল্যস্ফীতি কতটা সহায়ক? আমদানি ব্যয় কতটা নিয়ন্ত্রণে এবং এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কোন স্তরে রয়েছে? একই সঙ্গে সার্বিক হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে ভবিষ্যতে সরকারের করণীয় কী হতে পারে এবং তার উপর ভিত্তি করে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের রূপরেখাই বা কেমন হবে?

অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এত সব প্রশ্নের জবাব মিলবে রোববার। এদিন চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের গত ৯ মাসের অর্থনীতির অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে বসবে অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল।

আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার সংক্রান্ত এই কো-অর্ডিনেশনের কাউন্সিলের চলতি অর্থবছরে এটি দ্বিতীয় বৈঠক। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সকাল ১১টা থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকে দেশের অর্থনীতির সার্বিক চালচিত্রের হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরাসহ সেই আলোকে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট কেমন হতে পারে তারও একটি রূপরেখা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।

অর্থনীতি পুনরুদ্ধার চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ের এই বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর ইতিমধ্যে অর্থবছরের ৯ মাস পার হয়েছে। এ সময়ে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে করোনার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে সফল বলেই ধরে নেয়া হয়।

করোনার ধকল কাটিয়ে দেশে এখন সব কিছু স্বাভাবিক। ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে সমানতালে। কৃষি, শিল্প ও সেবার উৎপাদনও চলছে নিরবিচ্ছিন্নভাবে। রপ্তানির বাজারে চাঙ্গাভাব। তা সত্ত্বেও

করোনার বৈশ্বিক প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবও দেশকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং ক্রেতা-ভোক্তার চাহিদাযোগ্য অনেক পণ্য আমদানিনির্ভর। ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দামের লাগামহীন উর্ধ্বগতির ঢেউ দেশেও আছড়ে পড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির পারদও উর্ধ্বমুখী।

এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতা-ভোক্তদার চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি ১০ মেগা প্রকল্পসহ শত শত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রাখতে আমদানির চাকাও সচল রাখতে হচ্ছে। এতেই হলো যতো শঙ্কা। কারণ, দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে বৈদেশিক মুদ্রাও বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। এর ফলে আগামী দিনগুলোতে আমদানি ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি উন্নয়ন ব্যয়সহ সরকারের সার্বিক পরিচালন ব্যয়ও বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার সংক্রান্ত এই কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের আগে এ ধরনের বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা আরও জানান, কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের এই বৈঠকে দেশের রাজস্ব নীতি, মুদ্রা ও আর্থিক নীতি এবং মুদ্রা বিনিময় হার নীতি ও কৌশলের মধ্যে সমন্বয় রক্ষায় করণীয় নির্ধারণ এবং মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর সম্ভাব্য রূপরেখা অনুমোদন করা হবে।

বৈঠকে দেশে মুদ্রা সরবরাহ পরিস্থিতি ও ব্যাংকখাত থেকে সরকারি ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বিষয়ক তথ্যও উপস্থাপন করা হবে। মুদ্রা সরবরাহ ও লেনদেনের ভারসাম্যের উপর সরকারের অর্থনৈতিক নীতি কৌশলের প্রভাব পর্যালোচনা করা হবে।

এতে সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর কর, বাজেট এবং ঋণ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নীতির প্রভাব সম্পর্কে কাউন্সিলের নজরে আনবে অর্থ মন্ত্রণালয়। সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বাণিজ্য ও শুল্ক নীতির প্রভাব কাউন্সিলে উপস্থাপন করবে বাণিজ্য সচিব।

দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, সার্বিক আমদানি পরিস্থিতিসহ অর্থনীতির হাল তুলে ধরবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধি।

বৈদেশিক ঋণের পরিস্থিতি তুলে ধরবেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় (জিইডি) সচিব তুলে ধরবেন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) হালনাগাদ চিত্র।

সবশেষে বৈঠকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব, মুদ্রা ও বহিঃখাতের অর্থনীতির চলকসমূহের লক্ষ্যমাত্রা পর্যালোচনা করা হবে। এরপর ক্ষেত্রভেদে অর্থনীতির কোনো কোনো সূচকের লক্ষ্য সংশোধন বা পুণঃনির্ধারণ করা হতে পারে। একই সঙ্গে সেই অনুযায়ী সরকারি ঋণের লক্ষ্যমাত্রাও পুণঃনির্ধারিত হতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর