সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা তিন ধাপে জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২২ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় ধাপে ২০ মে এবং তৃতীয় ধাপে ৩ জুন পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
বুধবার বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকালের সভায় তিন ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম ধাপে ২২ এপ্রিল, দ্বিতীয় ধাপে ২০ মে এবং তৃতীয় ধাপে ৩ জুন পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ধাপের পরীক্ষা আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
প্রথম ধাপে যেসব জেলায় পরীক্ষা২২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, গাজীপুর, নরসসিংদী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও লালমনিরহাট জেলার সব উপজেলায় পরীক্ষা হবে।
আর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর; যশোর জেলার ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা; ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ; নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া; কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদি; টাঙ্গাইল জেলার সদর, ভূঞাপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ি, ঘাটাইল, গোপালপুর; কুমিল্লা জেলার বরুয়া, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি; নোয়াখালী জেলার কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমড়ি ও সুবর্ণচর উপজেলায় পরীক্ষা হবে।
যেভাবে প্রবেশপত্র পাবেনপ্রার্থীদের আবেদনে উল্লিখিত মোবাইল নম্বর থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোডের এসএমএস পাঠানো হবে। আগামী ২২ এপ্রিলের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য প্রার্থীরা ১৭ এপ্রিল থেকে admit.dpe.gov.bd- ওয়েবসাইটে Username এবং Password দিয়ে অথবা এসএসসির রোল, বোর্ড ও পাশের সাল দিয়ে লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
প্রবেশপত্র অবশ্যই রঙিন হতে হবে। একই সঙ্গে প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলী এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এবং প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।
গত ১০ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় এপ্রিলে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এপ্রিলের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া শেষে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের জুলাই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রাক-প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৬৩০টি এবং প্রাথমিকে ৬ হাজার ৯৪৭টি শূন্য পদের কথা উল্লেখ রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি।
ইতোমধ্যে অবসর নেয়ার কারণে আরও ১০ হাজারের বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক পদে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ১৩তম গ্রেডে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হবে। এই গ্রেড অনুযায়ী শিক্ষকদের বেতন হবে ১১ হাজার থেকে ২৬ হাজার ৫৯০ টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীদের বয়স বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং করোনার কারণে সাধারণ ছুটি শুরুর তারিখ অর্থাৎ চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাদের বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর, তারা আবেদন করতে পারবেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর।