বন্ধুরাষ্ট্র থেকে পাওয়া তথ্য ও নিজেদের বিশ্লেষণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছিল, দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়েছে। যে কারণে নববর্ষকে ঘিরে তাদের বাড়তি নিরাপত্তা।
নববর্ষ ঘিরে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নও (র্যাব) নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তবে তারা বলছে, নববর্ষে জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
বুধবার দুপুরে রমনা বটমূল এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে এসে র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে নববর্ষকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাইনি। তবু আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে জঙ্গি বা যেকোনো নাশকতার পরিকল্পনা রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
নববর্ষকে কেন্দ্র করে ভার্চুয়াল জগতে যাতে কেউ কোনো উসকানিমূলক বা মিথ্যা তথ্য ছড়াতে না পারে, সে জন্য র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।
ডিএমপি জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা বলেছে, র্যাবের কাছে সে ধরনের কোনো তথ্য আছে কিনা প্রশ্নে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই।
তিনি বলেন, ‘সাইবার পেট্রলিং করছি। র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ২৪ ঘণ্টাব্যাপী তারা দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তারা কোনো তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জানাচ্ছেন। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সকল গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নিজ নিজ সাইবার টিমের মাধ্যমে কাজ করছে। যেকোনো জায়গা থেকে কোনো তথ্য পেলে আমরাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাব বলে আশা করছি। আমরা ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত রয়েছি।’
রমনা বটমূলে নিরাপত্তার বিষয়ে দেখছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আছে। দু'পক্ষের মধ্যে সমন্বয় আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘অবশ্যই সমন্বয় আছে। আমরা সমন্বয় সভা করি। সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলার মেট্রোপলিটনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ফোর্সের সাথে কাজ করি। সব জায়গায় সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি।’
নাশকতার প্রস্তুতি বা এ ধরনের থ্রেট মাথায় নিয়েই নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় নাশকতা সংঘটিত হয়েছিল। এ জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকি। কোন রকমের ঘটনা যাতে সংঘটিত না হতে পারে। এর মানে এই নয় যে, হুমকি আছে দেখে প্রস্তুত থাকি। হুমকি না থাকলেও প্রস্তুত থাকি। সব সময় আমরা প্রস্তুত আছি। মানুষের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। দায়িত্ববোধ থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।’
র্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
র্যাবের সীমিত জনবল নিয়ে সারা দেশে নিরাপত্তা দেয়ার সক্ষমতা র্যাবের আছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ‘সবার সাথে সমন্বয় করে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। ইতোপূর্বে সবার সাথে মিলে আমরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছি।’
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে হুজি জঙ্গিদের ওই বোমা হামলায় ১০ জন নিহত এবং অনেকে আহত হন।
এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয় থানায়। ২০০৮ সালের ২৯ হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।