প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মুনাফার হার প্রায় অর্ধেক কমানো হয়েছে। দুটি বন্ডেই এত দিন চার স্তরে মুনাফা দেয়া হয়েছে। এখন স্তর করা হয়েছে তিনটি।
তবে বন্ড দুটিতে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেয়া হয়েছে। আগে বন্ড দুটিতে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা গেলেও এখন সীমাহীন বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির পর বিষয়টি ব্যাংকগুলোর পরিপালনের জন্য মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে।
যারা নতুন করে বিনিয়োগ করবেন, শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এ হার কার্যকর হবে। আগের কেনা বন্ডে মেয়াদ পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত আগের হারে মুনাফা পাবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা ডলারে তিন বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। এগুলো হলো; ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড। এসব বন্ড বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস, দেশি ব্যাংকের বিদেশি শাখা ও বাংলাদেশের ব্যাংক শাখায় পাওয়া যায়। এসব বন্ডের বিপরীতে দেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন প্রবাসীরা। বিনিয়োগ করা অর্থ চাইলে আবার বিদেশেও ফেরত নেয়া যায়। এসব বন্ডে বিনিয়োগ করে সিআইপি সুবিধার পাশাপাশি আয়ে করমুক্ত সুবিধাও পাওয়া যায়।
সার্কুলারে বলা হয়, যেসব প্রবাসী নতুন করে বন্ড কিনবেন, শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এ হার কার্যকর হবে। আগের কেনা প্রবাসী বন্ডের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত আগের হারে মুনাফা পাবেন।
নির্দেশনা অনুযায়ী ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে ১ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে প্রথম বছর শেষে এতদিন ৬ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যেত। এখন পাওয়া যাবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা।
একইভাবে দ্বিতীয় বছর শেষে ৭ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছর শেষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের বদলে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া ১ লাখ ১ থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করে প্রথম বছর শেষে মুনাফা মিলবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় বছর শেষে ৪ শতাংশ ও তৃতীয় বছর শেষে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।
৫ লাখ ১ ডলার থেকে তার বেশি অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে প্রথম বছর শেষে ২ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় বছর শেষে ৩ শতাংশ ও ৩ বছর শেষে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।
ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে ১ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে প্রথম বছর শেষে আগে মুনাফা ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এখন দেয়া হবে ৪ শতাংশ।
দ্বিতীয় বছর শেষে আগে দেয়া হতো ৬ শতাংশ। এখন সেটা কমে হয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। আর তৃতীয় বছর শেষে ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে। আগে মুনাফা ছিল সাড়ে ৬ শতাংশ।
এ ছাড়া ১ লাখ থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে প্রথম বছর শেষে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছর শেষে ৬ শতাংশের বদলে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ ও মেয়াদান্তে ৬ শতাংশের বদলে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।
৫ লাখ ১ থেকে তার বেশি ডলারে বিনিয়োগের বিপরীতে আগে প্রথম বছর শেষে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যেত। এখন সেটা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শতাংশ। দ্বিতীয় বছর শেষে ৬ শতাংশের বদলে ২ দশমিক ৫ শতাংশ ও ৩ বছর শেষে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের বদলে ৩ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের চালু করা ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড নামে আরও একটি বন্ড রয়েছে। তবে এ বন্ডের মুনাফার হার ও স্তর কমানোর কথা কিছুই বলা হয়নি। এ বন্ডে ৫ বছর শেষে মুনাফার হার ১২ শতাংশ।