বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাওরে আবারও পানি বাড়ার পূর্বাভাস

  •    
  • ১২ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:২৭

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের কিছু স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

হাওরে আবারও পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। পানি বাড়তে পারে এমন খবর শুনে হতাশা আর শঙ্কার ছাপ এখন তাদের চোখেমুখে।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল উজানের ঢলে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার নদী-তীরবর্তী চর ও খালেবিলে চাষ করা ৩৫০ হেক্টর নিচু জমির ধান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইটনা উপজেলা। চোখের সামনেই তলিয়ে গেছে সারা বছরের কষ্টের ফসল। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না কৃষকদের। কেউ কেউ কাঁচা ধানই কেটে নিয়ে গেছেন বাড়িতে। এরপর মূল হাওরের ফসল রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন এলাকার কৃষক। ফসল রক্ষা করতে অনেকে বাঁধেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। অবশেষে ৭ এপ্রিল কমতে শুরু করে পানি। গত কয়েক দিনে প্রায় ২০ সেন্টিমিটার পানি কমেছে বলে জানা গেছে।

পানি কমতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরেছিল কৃষকের মাঝে। এর মাঝেই খবর এলো- নতুন করে আবারও পানি বাড়তে পারে!

করিমগঞ্জের বারঘরিয়া গাবতলি এলাকার কামরুল ইসলাম ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে টাকার বিনিময়ে অন্যের ৫ একর জমি চাষাবাদ করেছেন।

কামরুল বলেন, ‘প্রথমে পানি যেভাবে বাড়তে শুরু করেছিল তাতে জমির ফসলের মায়া ছেড়েই দিয়েছিলাম। গত কয়েক দিন ধরে যখন দেখলাম পানি কমতে শুরু করেছে, তখন আবার নতুন করে আশা জেগেছে। কিন্তু আজকে সকালে যখন শুনলাম পানি আবার বাড়বে, তখন থেকেই দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস আর আজকে সকালে আকাশের যে সাজ দেখলাম তাতে ফসল বাড়িতে নিতে পারব কি না আল্লাহই জানেন।’

একই হাওরের হালুয়া খালের পাড়ে ৩ একর জমি চাষ করেছেন ইটনা সদর ইউনিয়নের বানিয়াহাটির কৃষক বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘পানি কমতে শুরু করেছে দেখে মনে শান্তি ফিরেছিল। আর কয়েকটা দিন পরই পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু এখন যদি আবারও পানি বাড়ে, তবে ফসল ঘরে তুলতে পারব না।’

সম্প্রতি পানি বাড়তে শুরু করলে নিচু জমিগুলোর কাঁচা ধানই কেটে বাড়ি নিয়ে গেছেন অনেক কৃষক

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেল অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের কিছু স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ জেলার প্রধান নদনদীসমূহের পানি সমতল কিছু পয়েন্টে দ্রুত বাড়তে পারে। তবে, পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।’

তিনি জানান, সুনামগঞ্জে ২৫০ মিলিমিটার, হবিগঞ্জে ২৩০ মিলিমিটার, নেত্রকোণায় ২০০ মিলিমিটার, কিশোরগঞ্জে ১৫০ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টি হতে পারে।

এই বৃষ্টিবলয়টি মূলত দুই ধাপে দেশে আঘাত করছে। প্রথম ধাপ ১০ থেকে ১৩ এপ্রিল সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের অনেক এলাকায়। আর দ্বিতীয় ধাপে সারা দেশে ১৪ থেকে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে। তবে প্রথম ধাপ চলার সময় দেশের কিছু স্থানে আকস্মিক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রবল কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টিও হতে পারে দেশের অনেক এলাকায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছাইফুল আলম জানান, হাওরের কৃষকদের সঙ্গে কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকেছে, সেসব জমির ধান দ্রুত কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে।

ছাইফুল আলম বলেন, ‘হাওরে এখনও পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়নি। জমির ধান সবে পাকতে শুরু করেছে। আর কয়েক দিন পরই পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু এর মধ্যে যদি আবারও বৃষ্টি হয় আর পানি বাড়ে তবে বিভিন্ন হাওরের অনেক ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর