নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই বলছেন, এই দুর্নীতির জবাবদিহি এড়াতেই সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালকে পরিকল্পিত ‘হিজাব বিতর্কে’ জড়ানো হয়েছে।
ধরণী কান্ত বর্মণের প্রধান শিক্ষকের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১০ মে। নিয়ম অনুযায়ী, এরপর আমোদিনী পালের এই পদে আসার কথা। অভিযোগ উঠেছে, ধরণী কান্ত বর্মণ তার ঘনিষ্ঠ শিক্ষক রবিউল ইসলামকে পরবর্তী প্রধান শিক্ষক করতে চান। এ জন্য আমোদিনী পালকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরার কারণে কমপক্ষে ২০ ছাত্রীকে মারধরের তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজনের বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, হিজাবের কারণে কাউকে মারা হয়নি। স্কুলের নির্ধারিত পোশাক না পরার কারণে গত বুধবার আমোদিনী পালসহ দুই শিক্ষক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেন। তাদের মধ্যে হিন্দু ছাত্রী ও ছেলে শিক্ষার্থীও ছিল। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর দাবি, বারবার সতর্ক করার পরও স্কুল ইউনিফর্ম না পরার কারণে তাদের ‘শাসন’ করা হয়েছে।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ
আরও পড়ুন: নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?
আমোদিনী পালকে ‘ফাঁসানোর’ কারণ কী হতে পারে সে বিষয়েও অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনীকে ফাঁসাতেই পরিকল্পনা করে হিজাবের ইস্যু তৈরি করা হয়। এই পরিকল্পনায় বর্তমান প্রধান শিক্ষকসহ তার ঘনিষ্ঠ শিক্ষক রবিউল ইসলাম ও অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের দায়ী করছেন তারা।
বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষক ও কর্মচারী নিউজবাংলাকে জানান, স্কুলে নিয়োগ বিনিময়ে প্রায় কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নিয়োগের সময় নেয়া অর্থ স্কুলের উন্নয়ন ফান্ডে দেয়ার কথা থাকলেও তা করেননি প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত। তার বিদায়ের সময় এই অর্থের হিসাব যাতে না দিতে হয় সে জন্যই আমোদিনী পালকে সরানোর চেষ্টা চলছে।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয় অর্ধশত বছরের পুরোনো। ২০১০ সালের শুরুর দিকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে সেখানে যোগ দেন ধরণী কান্ত বর্মণ। এরপর গত ১২ বছরে তার অধীনে ৬ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ
এসব নিয়োগে বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে খোদ নিয়োগপ্রাপ্তরাই নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
কয়েকজন শিক্ষক নিউজবাংলাকে বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আগামী ১০ মে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হবেন আমোদিনী পাল। তিনি প্রধান শিক্ষক হয়ে যাতে ধরণী কান্ত বর্মণের আর্থিক লেনদেনের হিসাব চাইতে না পারেন সে জন্য সহকারী আরেক শিক্ষক রবিউল ইসলামকে নিয়ে হিজাব বিতর্ক তৈরি করা হয়।
এই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর নিজের অনুগতদের দিয়ে একটি অ্যাডহক কমিটি করেন প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত। আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে কথিত হিজাব অবমাননার অভিযোগ ওঠে গত বুধবার। এর এক দিন পরেই অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই কমিটির তালিকা জমা দিতে বুধবার রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে গিয়েছিলেন ধরণী কান্ত।
এলাকায় বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত মাহমুদুল হাসান সুমনকে অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। আর সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এবং শিক্ষক রবিউল ইসলামের চাচাতো ভাই রমজান আলী।
এই অ্যাডহক কমিটি আমোদিনী পালের পরিবর্তে রবিউল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করতে চায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়
স্কুলের সহকারী শিক্ষক শাহাদত হোসেন রতন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ২০১১ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছি। সে সময় আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার মতো নেয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল এই টাকার একটি অংশ স্কুলের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে, বাকি টাকা স্কুলের ফান্ডে জমা হবে। তবে পরে স্কুলের কোনো উন্নয়নও হয়নি, ফান্ডেও টাকা নেই।’
রতন বলেন, ‘২০১১ সাল থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আমিসহ ১০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা হলেন বিদুৎ কুমার, আকরাম হোসেন, সুনীতা রাণী মণ্ডল, আমোদিনী পাল, আশরাফুল ইসলাম। স্কুলের অফিস সহকারী আহসান হাবিব, আয়া আমিনা খাতুন, দপ্তরি জুয়েল হোসেন এবং ঝাড়ুদার আবু মুসাকেও নিয়োগ দেয়া হয়।
‘প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ করে টাকা নেয়া হয়েছে। ৪ কর্মচারীর কাছ থেকেও ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে। যার অধিকাংশ ঢুকেছে প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণের পকেটে। এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। আমোদিনী পাল প্রধান শিক্ষক হলে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে। আর আমরা চলতি মাসেই আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছি। তিনি (প্রধান শিক্ষক) কোনো হিসাব দিতে পারেননি।’
তার দাবি, আমোদিনী পালকে সরাতে প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত ও রবিউল ইসলাম হিজাব বিতর্ক ছড়িয়েছেন। এ কাজে সহায়তা করেছে অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটি। স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন তরফদারের ডিও লেটার জাল করে অ্যাডহক মানেজিং কমিটি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষক রতন।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগের অনুলিপি
সহকারী শিক্ষক সুনীতা রাণী মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক বুধবার রাজশাহীতে গিয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে অ্যাডহক কমিটির তালিকা জমা দেবেন- সেটা আমরা আগেই জানতাম।
‘পরের দিন তিনি হুট করেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেন আমোদিনী পাল ম্যামকে। স্থানীয় কিছু মানুষকে তিনিই উত্তেজিত করেছেন। স্কুলের আয়-ব্যয় ও নিয়োগের টাকার কোনো সঠিক হিসাব তিনি এখনও বুঝিয়ে দেননি। আমোদিনী পাল ম্যাম প্রধান শিক্ষক হলে তার (ধরণী কান্ত) নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যাবে। তাই তিনি এসব করেছেন।’
সহকারী শিক্ষক আকরাম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীক্ষা বা যোগ্যতায় টিকে গেলেও অনেক কর্মক্ষেত্রে যারা উপর পদে থাকেন তাদের খুশি করতে হয়। শুধু আমি কেন, অনেকেই হয়তো এমন খুশি করেই চাকরি করে যাচ্ছেন।’
সহকারী শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমার ও আশরাফুল ইসলামও স্বীকার করেন তাদের কাছ থেকেও নিয়োগের সময় টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তবে এখন আর বিষয়টি নিয়ে তারা কথা বলতে চান না।
স্কুলের অফিস সহকারী আহসান হাবিব, আয়া আমিনা খাতুন, দপ্তরি জুয়েল হোসেন এবং ঝাড়ুদার আবু মুসার কাছ থেকেও টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের একজন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্যার, আমরা নিচু পদে কাজ করি। আমরা যদি কিছু বলি তবে পরে বড় ধরনের ঝামেলায় পড়তে পারি।’
যাকে নিয়ে স্কুলের হিজাব বিতর্ক সেই সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের বাড়িতে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, তার চোখেমুখে আতঙ্ক ও ভয়ের ছাপ।
আমোদিনী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে পুলিশ, সংবাদকর্মী, প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, শিক্ষা বিভাগের স্যারেরা এসে অনেক প্রশ্ন জানতে চেয়েছেন। আমি সব মিলে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার (ধরণী কান্ত) পছন্দের কোনো এক শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে আমি কোনোভাবেই প্রধান শিক্ষক না হতে পারি সে জন্যই আমার বিরুদ্ধে হিজাব বিতর্ক ছড়িয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি (ধরণী বর্মণ)। সে নিয়োগে অনেক টাকা গ্রহণ করেছেন। স্কুলে বিভিন্ন সময় আসা বরাদ্দ, স্কুলের ফান্ডের হিসাব কোনোটাই সঠিকভাবে দিতে পারবেন না। আর কখনও তিনি হিসাবই দেননি।
‘অবসরে যাওয়ার আগে তো সবকিছুর হিসাব দিয়ে যেতে হবে, সেটাই তো নিয়ম। সেগুলোর হিসাব যাতে না দিতে হয়, আর আমি যদি প্রধান শিক্ষক হয়ে যাই তাহলে তো তাদের সব অর্থ লোপাট ধরা পড়ে যাবে। তাই তিনি অতি কাছের কিছু লোককে দিয়ে এমন জঘন্য বিতর্কের সৃষ্টি করলেন।’
আমোদিনী পাল বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনও ধরণী কান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করছে। যারা অন্যায় করে এত টাকা লোপাট করল তাদের বিচার হচ্ছে না। মাঝখান থেকে সবার কাছে আমাকে এত হেয় করা হলো।’
হিজাব বিতর্কের পর স্কুল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে
অভিযোগ অস্বীকার করছেন সংশ্লিষ্টরা
প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধেও। তবে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
রবিউল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত গুড রিলেশন থাকতেই পারে, তার মানে এই নয় স্কুলের নিয়োগবাণিজ্য বা টাকা লোপাট করেছি। আমার বিরুদ্ধে কাউকে ফাঁসানো বা অর্থ লোপাটের অভিযোগ মিথ্যা।’
বিদ্যালয়ের অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটিতে চাচাতো ভাই রমজান আলীর জায়গা পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন রবিউল।
এ বিষয়ে রমজান আলীর বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও সফল হয়নি নিউজবাংলা। অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুদুল হাসান অবশ্য আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নাকচ করেছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তথ্যও নাকচ করেছেন তিনি।
মামুদুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কোনো দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নই। এলাকায় সেবামূলক কাজ করি বলেই হয়তো আমাকে সভাপতি করা হয়েছে। এগুলোর মাঝে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’
অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটি করায় অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ। স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার জাল করার অভিযোগও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ধরণী কান্ত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এমপি সাহেবের ডিও লেটার ভায়োলেট করিনি। নিয়ম মেনেই অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষা অফিস ও রাজশাহী শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। তারা সেটা গ্রহণও করেছে।
‘আর রমজান আলী অভিভাবক সদস্য হিসেবে আছেন। তিনি শিক্ষক রবিউল ইসলামের ভাই হতে পারেন, এতে সমস্যার কী আছে! কমিটির মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়। এরপর অ্যাডহক কমিটি করতে একটু সময় লেগেছে। তবে কাজটি যাতে সঠিকভাবে হয় সে জন্যই সময় লেগেছে।’
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘হিজাব বিতর্কে আমাকে জড়ানো ঠিক নয়, কারণ আমি সেদিন ছিলাম রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে। আমার নামে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টিও সঠিক নয়, আমি কোনো নিয়োগ বাণিজ্য করিনি। কোনো টাকা-পয়সা নিজের পকেটে নেইনি।’
দুদকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ অভিযোগ দিয়েছিল সত্য। গত বছরের শেষের দিকে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে তদন্ত করে গেছে, তবে প্রতিবেদন এখনও দেয়নি। দিলে আমি নির্দোষ হব।’
স্কুলের উন্নয়ন না হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ফান্ডে কিছু অর্থ তো আছেই। স্কুলের দেয়াল রং করেছি, কিছু চেয়ারসহ আসবাবপত্র কিনেছে। যেটুকু পেরেছি কাজ করেছি। আগামীতে হয়তো আরও কাজ করতাম।’
হিজাবের কারণে হেনস্তার অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষার্থীর বাড়ি এখন তালাবদ্ধ
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাডহক কমিটির তালিকা মূলত প্রধান শিক্ষক করে আমাদের কাছে পাঠান। তারপর আমরা সুপারিশ করে বিভাগীয় শিক্ষাবোর্ডে পাঠাই। এখন সেই তালিকায় কারও সুপারিশ জাল হয়েছে কি না বা কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে কি না, সেটি আমাদের জানা নেই। কমিটি হওয়ার পর বা জমা দেয়ার সময়ে স্থানীয় কেউ অভিযোগ করেননি। এখন সার্বিক বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
সুপারিশ জাল করার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন তরফদারের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তবে একাধিকবার ফোন করে এবং খুদেবার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
স্কুলে হিজাব বিতর্কের তদন্ত নিয়ে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে তার সত্যতা আমরা পাইনি। একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে বলে আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছি। আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন হাতে পাওয়া যাবে। তখন বিস্তারিত বলা যাবে।’