দেশে খাদ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় বীজের মাত্র ৭ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। বাকি ৯৩ শতাংশই আমদানি করতে হয়। এ অবস্থায় দেশের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে নিজস্ব বীজ উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে এফবিসিসিআই’র কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্প সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটি।
বুধবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির প্রথম বৈঠক থেকে এই তাগিদ দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘যে কোনো দেশের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোভিড মহামারিকালীন কৃষি উৎপাদনে ভর করেই বাংলাদেশের অর্থনীতি তূলনামূলক ভালো অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে। সরকার কৃষিভিত্তিক শিল্পকে রপ্তানিমুখী শিল্পে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি হলেও সেগুলোর ক্রেতা মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিরাই। মূল বাজারে কেন এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না তা জানতে লন্ডনের বাজারে গবেষণার জন্য পিডব্লিউসিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গবেষণার তথ্য পাওয়ার পর, বিদেশের বাজারে বাংলাদেশি কৃষিপণ্য রপ্তানি আরো বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে হালাল খাবার নিতে আগ্রহী। তাই এই খাতেও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ ড. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘বীজের ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বীজ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই এ খাতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।’
কমিটির কো-চেয়ারম্যান তাসফিয়া জসিম বলেন, ‘কৃষি খাতে শ্রমশক্তির ৫৪ শতাংশই নারী। এই বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের পুরুষের সমান মজুরি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। আবার নারীদের ভূমির মালিকানা ১০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম। কৃষি খাতে টেকসই উন্নয়নে নারীর অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি জরুরি।’
এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে পাওয়া সুপারিশগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেন। কৃষি খাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে যেকোনো সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
এর আগে কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবুল হাশেম জানান, শিগগির স্ট্যান্ডিং কমিটির উদ্যোগে একটি জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হারুন অর রশীদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকসহ স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও অন্য সদস্যরা।