বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তলিয়ে গেল চাচুয়ার হাওরও

  •    
  • ৬ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৩২

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরাঞ্চলেই ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ হয়েছে।

উজানের ঢলে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেল কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার আরও একটি হাওর। উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নে এটির অবস্থান। গতকাল রাত থেকে তলিয়ে যেতে শুরু করে হাওরটি।

স্থানীয় কৃষক ও জনপ্রতিনিধিদের তথ্যমতে, চাচুয়ার হাওরে জমির পরিমাণ ৭০০-৮০০ একর। তবে কৃষি অফিস বলছে, এই হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২০০ একরের মতো।

গতকাল রাতেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, পানি আরও বাড়বে, তবে মূল হাওরগুলোয় এর প্রভাব পড়বে না। হাওরে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পানি প্রবেশ করেছে, মূল হাওরের জমিগুলো তার চেয়ে আরও এক মিটার উঁচুতে আছে। তবে ভারতের মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি হলে অনেক জমির ফসল তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

গত শনিবার থেকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নদীর তীরবর্তী চর আর খালে-বিলে চাষ হওয়া নিচু জমিগুলো তলিয়ে যায়। এবার মূল হাওরগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।

ধনপুর ইউনিয়নের কৃষক রণজিৎ চন্দ্র দাস বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে কৃষকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও হাওরের ফসল রক্ষা করতে পারেননি। হাওরের চারদিকে যেদিক দিয়ে একটু পানি ঢুকেছে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে সেখানেই মাটি ফেলেছেন। বাঁধ দিয়েছেন। তার পরও বাড়তি পানির চাপে আর শেষ রক্ষা হলো না। দেখতে দেখতেই তলিয়ে গেল সারা বছরের কষ্টের ফসল।’

ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘পানি বাড়তে শুরু করলে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় কৃষকরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। ফসল রক্ষার্থে যখন যা করার দরকার কৃষকরা তা-ই করেছেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সারা বছরের স্বপ্নের ফসল তলিয়ে গেল নিমিষেই।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘গতকাল রাতেই চাচুয়ার বাঁধ নির্মাণের জন্য এস্কেভেটর পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পানির গতিবেগ এত বেশি যে তারা ব্যর্থ হয়ে ফসলের মায়া ত্যাগ করে চলে এসেছে।’

ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল সাহা বলেন, ‘উজানের ঢলে নেমে আসা পানিতে এ জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইটনা উপজেলা। আর এই উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধনপুর ইউনিয়নের আফাইন্নের হাওর আর চাচুয়ার হাওর।’

তিনি জানান, দুদিন আগে আফাইন্নের হাওরে ৫০ হেক্টর জমির ফসল একেবারে তলিয়ে গেছে। আর আজ চাচুয়ার হাওরে ৭০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের বরাতে তিনি জানান, ৯ তারিখ পর্যন্ত একটু একটু করে পানি বাড়লেও আগাম বন্যার আশঙ্কা নেই। পুরো উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৭০০-৮০০ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন ছাড়া বাকি আট ইউনিয়নের মূল হাওরের জমিগুলোয় এখনও পানি ঢোকেনি। বাঁধগুলোও ঠিক আছে। আমাদের লোকজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। ইটনার জিওলের বাঁধের পাশে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে পানি যে লেভেলে আছে, মূল হাওরের জমিগুলো এর চেয়ে আরও এক মিটার ওপরে আছে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বারত দিয়ে তিনি বলেন, ‘গতকাল সারা রাত একটু একটু করে পানি বেড়েছে। ভারতের মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি হলে পানি আরও বেড়ে যাবে। এতে হাওরের ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরাঞ্চলেই ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছাইফুল আলম জানান, হাওরের কৃষকদের সঙ্গে কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকেছে, সেসব জমির ধান দ্রুত কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর