ফরিদপুর পৌরসভায় কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছন মেয়র অমিতাভ বোষ।
উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রতি সম্মান রেখে তিনি এই কার্যক্রম বন্ধ করেছেন বলে নিউজবাংলাকে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নূরুল্লা মো. আহসান।
এর আগে কুকুর নিধনে পৌরসভা থেকে মাইকিংয়ের বিষয়টি ফেসবুকে সমালোচিত হয়। আইনে মানা, তবুও কুকুর নিধনে পৌরসভার মাইকিং শিরোনামে নিউজবাংলা এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আহসান বলেন, ‘আমাকে হেড অফিস থেকে গত সোমবার রাতে বিষয়টি অবগত করা হয়। আমাকে কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলে।
‘তবে সকালে মেয়রকে বিষয়টি অবগত করা হলে, তিনি কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন বলে জানান। উচ্চ আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান রেখেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
কয়েক দিন ধরে পৌরসভার পক্ষ থেকে করা মাইকিংয়ে বলা হচ্ছিল, কিছুদিনের মধ্যে শহরে কুকুর নিধন শুরু হবে। সবাই যার যার পালিত কুকুর যেন ঘরে আটকে রাখে।
পৌরসভার সচিব তানজিলুর রহমান নিউজবাংলাকে এর আগে বলেন, ‘শহরে কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝে কুকুরের কামড়ে আহত অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মোড়ে মোড়ে অসংখ্য কুকুর। কুকুরের আতঙ্কে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা চলাফেরা করতে পারে না।
‘উচ্চ আদালত কুকুর নিধন নিষিদ্ধ করেছে। তবে এর পরিবর্তে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে কুকুরের প্রজনন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তা তারা করছে না। ফলে কুকুরের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে ও মানুষ আক্রমণের শিকার হচ্ছে।’
প্যানেল মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেছিলেন, ‘পৌরসভার অর্থায়নে ও পরিচালনায় আগামী রোববার থেকে এক সপ্তাহ বিভিন্ন এলাকায় কুকুর নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পৌরবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কুকুর মারা হবে। তবে কারো পালিত কুকুর মারা হবে না। পালা কুকুরের গলায় বেল্ট বা গায়ে চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে। শুধু পাগলা ও ঝুঁকিপূর্ণ কুকুর মারা হবে।’
প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ এর ৭-এর-২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি মালিকবিহীন প্রাণী হত্যা করিলে তা এই আইনের অধীনে অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।
২০১৪ সালে একটি সংগঠনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুকুর নিধনে আদালতেরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্যানেল মেয়র বলেছিলেন, ‘আমি বিষয়টা জানি। তবে মানুষকে নিরাপদে রাখতে কিছু কিছু এলাকায় কুকুর মারা হবে।’
তিনি জানান, নাগরিক সমন্বয় সভার সিদ্ধান্তেমতে ও পৌর নাগরিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই কুকুর নিধন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
সামাজিক সংগঠন নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক পান্না বালা বলেন, ‘পৌর কর্তৃপক্ষের কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করায় আমি তাদের সাধুবদ জানাই। আইনে স্পষ্ট করে কুকুর নিধনের ব্যপারে নিষেধ করা আছে, যা না মানা আইন বিরোধী ও তার শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা আছে।’