খুলনা মহানগরীর জোড়াগেট এলাকায় শহীদুল হাওলাদার হত্যা মামলায় আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে দুই আসামিকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ড। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন তিনজন।
মঙ্গলবার খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মুরাদ হোসেন গাজী।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, সুমন মল্লিক ও আশিকুর রহমান আশিক। যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছে কালু ওরফে ছোট কালু ও তালেব হাওলাদার। তাদের মধ্যে তালেব বাদে অন্যরা পলাতক।
এজাহারে বলা হয়, শহীদুল জেড়াগেট এলাকার হাজেরা বেগমের ছেলে। পেশায় ছিলেন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জেরে ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শহীদুল ও আসামিরা একই এলাকার বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা তাদের। এলাকায় তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। এলাকার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহীদুল ও অন্য আসামিদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। হত্যাকাণ্ডের কয়েকমাস আগে প্রতিপক্ষ বাবু ওরফে গুড্ডু বাবুকে কুপিয়ে জখম করেন শহীদুল। পরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবু।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি শুকুর ও তালেবের মাধ্যমে ডেকে নেয়া হয় শহীদুলকে। ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জোড়াগেট সংলগ্ন নাদিয়া অটোমোবাইলসের সামনে পৌঁছামাত্র সন্ত্রাসীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রাণ রক্ষার জন্য শহীদুল ওই দোকানে ঢুকে পড়ে। সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনার কিছুদিন পর গুড্ডু বাবু ক্রসফায়ারে নিহত হন।
এ ব্যাপারে নিহতের মা আটজনের নাম উল্লেখসহ আজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে খুলনা থানায় মামলা করেন।মামলার দুই আসামি বাবু ওরফে গুড্ডু বাবু ক্রসফায়ারে ও আল মাহমুদ সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হওয়ায় তাদের নাম বাদ দিয়ে একই বছর সাতজনের নামে চার্জশিট জমা দেয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খুলনা থানার ইন্সপেক্টর সৈয়দ মেশারেফ হোসেন।
১৮ জনের সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তিকরে আদালত এ রায় দিয়েছে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আরিফ মাহমুদ লিটন।