সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বাঘার হাওরে পানি ঢুকে কয়েক হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে।
দাঁড়াইন নদীর পানি সোমবার বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে হাওরে ঢুকতে শুরু করে।
বাঘার বাঁধ এলাকায় প্রায় এক হাজার একর জমি রয়েছে। শুরু থেকেই এই এলাকায় হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছিল। তাবে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গায় প্রকল্প না দিয়ে যেখানে-সেখানে প্রকল্প দিয়ে সরকারের টাকা লোপাট হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, জরিপ দলের হিসাব অনুযায়ী প্রকল্প দেয়া হয়েছে।
দামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘এই হাওরেই সব জমি। আমার চোখের সামনে সবকিছু ভেসে যাচ্ছে। এখন ছেলে মেয়ে নিয়ে কীভাবে চলব, এই চিন্তাই করছি।’
পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র জয় সরকার বলেন, ‘ফসল তলিয়ে যাওয়ার পর বাবার কান্না দেখে, নিজেই কাঁচি হাতে ধান কাটতে এসেছি। কিছু ধান এখনও পাকেনি। এরপরও তলিয়ে যাওয়ার চেয়ে কিছু ধান ঘরে নিতে পারলে দুয়েক দিনের খাবার হবে।’
চাষি রুপক দাশ বলেন, ‘বাঁধের কাজে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। আমরা সবাই বলেছিলাম, এই জায়গায় বাঁধ দরকার। কিন্তু তারা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) আমাদের কথা শোনেনি। অপ্রয়োজনীয় বাঁধ দিয়ে সরকারের টাকা লুটপাট হয়েছে।’
শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘যেদিক দিয়ে বাঘার হাওরে পানি ঢুকছে করেছে এটা আমাদের তালিকার বাহিরে। আমাদের আওতায় যে বাঁধগুলো রয়েছে, সর্বক্ষণ মনিটরিং করছি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো বাঁধ শাল্লায় নেই।’
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব নিউজবাংলাকে বলেন, এখানে সরকারি কোনো বাধ দেয়া হয়নি, এটি পরিকল্পনার বাইরে ছিল। কৃষকরা প্রতিবছর ঝুঁকি নিয়েই এখানে ধান চাষ করেন। পানি অভারফ্লো হয়ে এই হাওরে ডুকে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে ৭-৮ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গিয়েছে। যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের আমরা সহায়তার আওতায় নিয়ে আসব।’