বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেখছেন চরমোনাই পির

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২২ ২১:৫৩

‘আপনাদের এখন থেকেই হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে দলের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। অতীতে যারা ক্ষমতায় থেকেছে তাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। অতএব দলের নেতাকর্মীদের জনগণের হৃদয় জয় করতে হবে। মানুষের সেবা করতে হবে। দেশের কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

দেশের ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাইয়ের পির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তার দাবি, অতীতে যারা ক্ষমতায় থেকেছে মানুষ তাদের পছন্দ করছে না। এ কারণে তার দলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি তার দলের পক্ষে গণজাগরণ দেখতে পাচ্ছেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর গুলিস্তান শহীদ মতিউর রহমান পার্কে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়।

ক্ষমতায় যেতে ধর্মভিত্তিক সবগুলো দলের প্রতি ঐক্যের আহ্বানও জানান চরমোইয়ের পির। বলেন, ‘আসুন এদিক-ওদিক ছোটাছুটি না করে আমরা ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নেয়ার জন্য একটি টেকসই ঐক্য গড়ে তুলি।’

দুপুরের পর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন গুলিস্তান পার্ক এলাকায়। দুপুর ১২টার আগেই লোকারণ্য হয়ে যায় জায়গাটি। জুমা শেষেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পিকআপ ভ্যানে করে নেতাকর্মীদের গুলিস্তানমুখী যাত্রা দেখা গেছে। নেতাকর্মীদের চাপে জুমার নামাজের পরই গুলিস্তান-মতিঝিল সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে আসা কর্মী-সমর্থকরা ওই সড়কের ওপর অবস্থান করেন। এতে মানুষের চলাচলের ভোগান্তি তৈরি হয়।

সভাপতির বক্তব্যে চরমোনাই পির বলেন, ‘আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এ জন্য আমরা দেশে ইসলামের আলোকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। দেশের মানুষ আজ বুঝতে পারছে ইসলাম ছাড়া তাদের মুক্তির পথ নেই। দেশের আজ ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।‘

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যেতে পারলে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করব, দুর্নীতি উৎখাত করব। প্রতিহিংসার প্রতিবর্তে সমঝোতার রাজনীতির বিকাশ ঘটাব। আল্লাহতালা যেন আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের তৌফিক দেন।‘

দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের জন্য যা ক্ষতিকর তা পরিবর্তন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলনের নেতা।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ারও নির্দেশ দেন চরমোনাই পির। বলেন, ‘আপনাদের এখন থেকেই হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে দলের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে।

‘অতীতে যারা ক্ষমতায় থেকেছে তাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। অতএব দলের নেতাকর্মীদের জনগণের হৃদয় জয় করতে হবে। মানুষের সেবা করতে হবে। দেশের কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

১৪ দাবিতে ৩ মাসের কর্মসূচি

সমাবেশে মোট ১৪টি দাবি তুলে ধরেন চরমোনাই পির।

এগুলো হলো:

১. যেকোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। বাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

২. দেশে মদ ও সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করতে হবে;

৩. শিক্ষার সব স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। পূর্ণ ও আবশ্যিক বিষয় হিসেবে গণ্য করতে হবে;

৪. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলিম শিশুদের জন্য নামাজ ও কোরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে;

৫. শিক্ষা সিলেবাস থেকে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে কারা অন্তরীণ নির্দোষ আলেম ও রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে;

৬. জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে;

৭. সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে;

৮. তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন সশস্ত্র বাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে;

৯. নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। রেডিও, টিভিসহ সকল সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে;

১০. দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে;

১১. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে;

১২. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে;

১৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে;

১৪. সব রাজনৈতিক দলের জন্য সভা-সমাবেশসহ সাংবিধানিক স্বীকৃত সব রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বাকস্বাধীনতা উন্মুক্ত করতে হবে।

দাবি আদায়ে তিন মাসের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয় সমাবেশে। কর্মসূচি হলো- ১৩ মে রংপুরে, ২০ মে বরিশালে, ২১ মে খুলনায়, ২৭ মে চট্টগ্রামে, ৪ জুন রাজশাহীতে, ১০ জুন সিলেটে, ২০ জুন ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশ এবং ১ জুলাই ঢাকায় গণমিছিল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি না মেলায় ক্ষোভ

সমাবেশে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা।

চরমোনাই পির বলেন, ‘আমরা এক মাস আগে ঘোষণা দিয়েছিলাম, ৩১ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের সমাবেশ হবে। কিন্তু সরকার আমাদের অনুমতি না দিয়ে টালবাহানা করেছে।

‘তার পরও আমরা আশা করেছিলাম যে পরবর্তী সময়ে আমাদের সেখানে সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়া হবে। কিন্তু তারা চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে সেখানে সমাবেশ করতে দেয়নি।

এ বিষয়টি মেনে নিয়েছেন জানিয়ে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারিও দেন ইসলামী আন্দোলনের নেতা। বলেন, ‘আমাদের এই শান্তিকামী আচরণকে দুর্বলতা মনে করবেন না।’

এ বিভাগের আরো খবর