ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিবদমান দুই পক্ষের নেতৃত্বে চার গ্রামবাসীর মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।
উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখড়িয়া, খাকান্দা, নাজিরপুর ও ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের বাসিন্দারা শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষের সময় কয়েকটি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দ্বিতীয় দিনের এ সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিউজবাংলাকে সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী জানান, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরেও সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের এক হাজারের বেশি মানুষ ঢাল, সড়কি, বল্লম, টেঁটা ও ইট নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের একটির নেতৃত্ব দেন মানিকদহ ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য পুখড়িয়া গ্রামের করিম মাতুব্বর ও ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের ইয়াকুব আলী মিয়া এবং অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন পুখরিয়ার তুহিন খাঁ ও খাকান্দা গ্রামের কালাম মোল্লা।
কয়েক বছর ধরে চলা বিরোধের জেরে এর আগেও এদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী আরও জানায়, এ দুটি পক্ষই ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সনের সমর্থক। গত ২১ মার্চ ভাঙ্গার কাউলিবেড়ায় নিক্সনের এক জনসভায় যোগ দেন ওই দুই পক্ষের সমর্থকরা।
অভিযোগ, ওই সভা থেকে ফেরার পথে তুহিন খাঁর দলের সমর্থকরা ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতিকুর কাজীকে পুখুরিয়া রেলস্টেশন এলাকায় কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় আতিকুর ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা করেন।
সম্প্রতি ওই মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর জেরেই বৃহস্পতিবার এ দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে জানায় স্থানীয়রা। দ্বিতীয় দিন শুক্রবারও সংঘর্ষে জড়াল তারা।
খাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা পলি আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে হামলা শুরু হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন সর্দার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের পর পুলিশ আশ্বাস দিয়েছিল, আর সমস্যা হবে না। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে আবার তাণ্ডব শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে উভয় পক্ষের করিম মাতুব্বর, ইয়াকুব আলী মিয়া, তুহিন খাঁ ও কালাম মোল্লাকে ফোন করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি।’