বাংলা একাডেমিতে ‘বাংলাদেশের ৫০ বছরের পথচলা: গণহত্যা, জাতি-রাষ্ট্র এবং বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশার বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।
কানাডা, নিউজিল্যান্ড, তুরস্ক, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের প্রায় ২২ জন বিশেষজ্ঞ গবেষক সম্মেলনের প্রথম দিনে চারটি অধিবেশনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ, গণহত্যা এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।
বৃহস্পতিবার একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সম্মেলন উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন লে. কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক মানস ঘোষ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি মুনতাসীর মামুন।
সম্মেলনের প্রথম কর্ম অধিবেশনে প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশের মেঘনা গুহঠাকুরতা, শ্রীলঙ্কার রাধিকা হেত্তিয়ারাচ্চি, ভারতের মানস ঘোষ ও কিংশুক চ্যাটার্জী। কানাডা থেকে অনলাইনে বার্তা পাঠিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন আজরা রশীদ।
এই অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভাপতিত্ব করেন ভারতের সঞ্জয় কে. ভরদ্বাজ।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী যা করেছে সেটা ছিল নির্মম। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নতি করলেও বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পাকিস্তানি যে মানস সেটা এখনও পরাজিত হয়নি। যুদ্ধে জিতেছি, কিন্তু আদর্শিক অনেক লড়াইয়ে আমরা হেরে গেছি। বাঙালি সংস্কৃতির অনেক উপাদান হারিয়ে যাওয়ায় সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে।’
সম্মেলনের চতুর্থ কর্ম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। ছবি: নিউজবাংলা
দ্বিতীয় কর্ম অধিবেশনে প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশের আক্কু চৌধুরী ও নিজামুদ্দিন আহমেদ, তুরস্কের আহমেত জোশকুনায়দিন, ভারতের চৈতি দাস ও বাংলাদেশের চৌধুরী শহীদ কাদের। এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাহবুবর রহমান।
তৃতীয় কর্ম অধিবেশনে প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশের নাসির উদ্দীন, মো. মাহবুবর রহমান ও আলা উদ্দিন এবং ভারতের শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত ও তাপস দাস। নিউজিল্যান্ড থেকে অনলাইনে বার্তা পাঠিয়ে যোগ দেন স্যামুয়েল জেফ। এই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের শাহরিয়ার কবির।
চতুর্থ কর্ম অধিবেশনে প্রবন্ধ পাঠ করেন ভারতের সঞ্জয় কে. ভরদ্বাজ, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তিস্তা দাস এবং বাংলাদেশের মুর্শিদা বিনতে রহমান।
এই অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫০ বছরের মধ্যে বর্তমান সময়টা আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। এক যুগ ধরে যে অর্জন করেছি, সেটা ধরে রাখাই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ।
‘ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর রয়েছে দীর্ঘ ছায়া। প্রতিক্রিয়াশীলদের ছায়া কখনই দীর্ঘায়িত হয় না।’
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির গণহত্যা জাদুঘরকে উপহার প্রদান করেন। জাদুঘরের পক্ষ থেকে উপহার গ্রহণ করেন জাদুঘরের সভাপতি মুনতাসীর মামুন।
শুক্রবার সমাপনী অধিবেশনের মাধ্যমে সম্মেলন শেষ হবে।