বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আটা-ময়দায় তৈরি হচ্ছিল শ্বাসকষ্টের ওষুধ

  •    
  • ৩১ মার্চ, ২০২২ ১৮:৪২

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘চিকিৎসাপত্রে নাম দেয়ার পর কোনো রোগী যদি এসব নকল ওষুধ সেবন করেন, তাহলে কোনো উপকার হয় না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাও আস্থা হারান। নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি ক্রাইম।’

আটা-ময়দা ও রং ব্যবহার করে বানানো হচ্ছিল শ্বাসকষ্টের ওষুধ মোনাস-১০ এবং গ্যাসট্রিকের ওষুধ প্যানটোনিক্স-২০। পরে এসব নকল ওষুধ আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার মার্কেটে। সেখান থেকে ব্যবসায়ীদের হাতে বা কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

বুধবার এমন অভিযোগে রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় নকল ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখ ও ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালের মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যাল নামের আয়ুর্বেদী ওষুধ তৈরির কারখানায় এসব নকল ওষুধ তৈরি করা হচ্ছিল।

অভিযানে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০ পিস নকল প্যানটোনিক্স-২০ ট্যাবলেট ও ১৮ হাজার পিস নকল মোনাস-১০ ট্যাবলেট উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ডিবি।

সংস্থাটি জানিয়েছে, অধিক মুনাফার আশায় আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরির আড়ালে বাজারে বহুল প্রচলিত এই ওষুধটি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল চক্রটি। এসব নকল ওষুধ সেবনে কোনো ধরনের উপকার হয় না, বরং উল্টো নানা ধরনের জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘চিকিৎসাপত্রে নাম দেয়ার পর কোনো রোগী যদি এসব নকল ওষুধ সেবন করেন, তাহলে কোনো উপকার হয় না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাও আস্থা হারান। নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি ক্রাইম।’

তিনি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে এসব নকল ওষুধের বড় চালান আটক করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তার আলী আক্কাস শেখের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ফকিরাপুল এলাকা থেকে এসব ওষুধ তৈরি কারখানার মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও জানান, পরে গ্রেপ্তারদের সঙ্গে নিয়ে দর্শনায় গিয়াস উদ্দিনের কারখানায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির আড়ালে এসব বহুল প্রচলিত ওষুধ হুবহু নকল করে তৈরি করা হচ্ছিল।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘১৬ টাকার মোনাস-১০ তারা বিক্রি করত দুই টাকায়, ছয়-সাত টাকার প্যানটোনিক্সও তারা দুই টাকায় বিক্রি করত। এসব নকল ওষুধ তৈরিতে আটা-ময়দা-রং ব্যবহৃত হতো। এ ছাড়া ডাই বা স্টেরয়েডও ব্যবহৃত হতে পারে। নন-ফার্মাসিউটিক্যাল এসব ওষুধ সেবনে কোনো উপকার তো হয়ই না, বরং কিডনি-লিভার, হৃদযন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।’

ডিবির অভিযানে উদ্ধার হওয়া নকল ওষুধ। ছবি: নিউজবাংলা

অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘এসব নকল ওষুধের ফলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা হুমকির মুখে। দয়া করে এসব কেউ বানাবেন না, তাহলে বিপদে পড়ে যাবেন। যারাই নকল ওষুধ তৈরির চেষ্টা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমরা ভেজালবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করছি।’

তিনি বলেন, ‘এসব নজরদারির জন্য সরকারি সংস্থা আছে, তারা হয়তো করবে। আমরা এটা ধরিয়ে দিচ্ছি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করব।’

নকল ওষুধ চেনার উপায় প্রসঙ্গে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আসল ওষুধ হার্ড থাকে, নকলগুলো হালকা চাপ দিলে গুঁড়ো হয়ে যায়। নকল ও আসল ওষুধ চেনার উপায়গুলো প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’

যারা ওষুধ বিক্রি করছেন, তারা যদি কেউ নকল ওষুধের বিষয়টি টের পান তাহলে ডিবি পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর